নয়াদিল্লি: বাংলার রাজ্যপালকে (Governor CV Ananda Bose)দিল্লি ডেকে পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী (PM Narendra Modi)। নিজের বাসভবনে সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে আলোচনা করলেন। সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিট কথা হয়েছে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের।


প্রেক্ষাপট...
এই মুহূর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ থেকে শুরু করে বন্দিমুক্তির ফাইল ফেরত পাঠানো, নানা ইস্যুতে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাত তুঙ্গে।  গত জুনে, যেমন রাজ্যের ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল মাত্র ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের। বিবৃতি জারি করে সেই নিয়োগের কথা জানায় রাজভবনই। ট্যুইটে আচার্যের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগকে বেআইনি বলে পাল্টা আক্রমণ করেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই নিয়ে তীব্র বিতর্কের মধ্যেই সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসেবে বুদ্ধদেব সাউয়ের  নামে শিলমোহর দেন আচার্য তথা রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই নিয়ে টানাপোড়েন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে হালে তৃণমূলের বর্ষীয়ান সাংসদ সৌগত রায়ও বলেন, 'এক জন উজবুক রাজ্যপালকে পাঠিয়েছে।' তবে দলের সাংসদ-মন্ত্রীরাই যে শুধু তাঁর সমালোচনা করছেন, তা নয়। স্বয়ং তৃণমূলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখেও তীব্র নিন্দা শোনা যায়। চলতি মাসেই যেমন তিনি এবিপি আনন্দকে বলেছিলেন 'রাজ্যপালের কী প্রয়োজন? রাজভবনগুলিকে মিউজিয়াম করে দিন। রাজ্যপালের কোনও প্রয়োজন নেই। ... প্রত্যেক রাজ্যে রাজ্যপালকে দিয়ে সমান্তরাল সরকার চালানো হচ্ছে।' এর আগেও, সিভি আনন্দ বোসকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন মমতা। প্রশাসনিক ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার আগে নিজের দল গড়ে, ভোটে জিতে আসা উচিত বলে মন্তব্য করেন সে বার। সব মিলিয়ে সংঘাতের আবহ জারি থাকছেই। 


তাতে সাম্প্রতিকতম সংযোজন দত্তপুকুর-বিস্ফোরণ কাণ্ড নিয়ে রাজ্যপাল বোসের মন্তব্য। তিনি বলেন, 'অ্যাক্সিডেন্ট ইজ নট অ্যাক্সিডেন্টাল, সত্য খুঁজে বার করবে পুলিশ।' পাল্টা কটাক্ষ ধেয়ে আসে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের। তাঁর মতে, 'শকুনের রাজনীতি' করছেন রাজ্যপাল। 


পঞ্চায়েত নির্বাচন...
বস্তুত, গত কয়েক মাস ধরেই রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতের উত্তাপ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বের অশান্তি নিয়ে বার বার কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্য়পাল। রাজভবন থেকে বেরিয়ে তিনি পৌঁছে গিয়েছেন গ্রাউন্ড জিরোয়। অশান্তির অভিযোগ শুনতে রাজভবনে বেনজিরভাবে খুলেছেন পিস রুম। সম্প্রতি আবার দুর্নীতির অভিযোগ শুনতে রাজভবনে অ্য়ান্টি করাপশন সেলও খোলেন তিনি। তার উপর বন্দিমুক্তির ফাইল নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। গত ১৫ অগাস্ট, স্বাধীনতা দিবসের আগে কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে যে ৭১ জন বন্দির মুক্তির সুপারিশ এসেছিল, তার মধ্যে রাজ্যের জেলে বন্দি ১৬ জন বিদেশি বন্দির মুক্তির প্রস্তাবও ছিল। সেই নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর থেকে ফাইল পাঠানো হয় রাজভবনে। সেই ফাইলই নবান্নে ফেরত পাঠান রাজ্যপাল বোস। চরমে ওঠে সংঘাত। এসবের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর তাঁকে ডেকে পাঠানো, ৪৫ মিনিট কথা, সবটাই আলাদা মাত্রা পাচ্ছে। প্রসঙ্গত, পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই আচমকা দিল্লি সফর করেন রাজ্যপাল বোস। সে বার জল্পনা ছড়িয়েছিল, কোনও রিপোর্ট জমা দিতে যাচ্ছেন তিনি। এবার কী নিয়ে কথা? 


 


আরও পড়ুন:কীভাবে তৈরি করবেন মিষ্টি? মুখ্যমন্ত্রীর টিপস