প্রবীর চক্রবর্তী, কলকাতা: ফের রাতের শহরে বেপরোয়া গাড়ি। গতকাল রাতে বেহালার রায় বাহাদুর রোডে একটি ছোট হাতি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারে থাকা একটি লাইট পোস্টে সজরে গিয়ে ধাক্কা মারে। চালক সহ আহত আরও এক। 


নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা রাতের কলকাতায়: গতকাল রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। আহতদের বিদ্যাসাগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়ির খালাসিকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু চালকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকেএম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত করা হয়।  অবস্থার অবনতি হওয়াতে সেখান থেকেও চালককে আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গাড়িটিকে আটক করেছে পুলিশ।


চলতি মাসেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে বেহালায়। মাটিবোঝাই লরির ধাক্কায় মৃত্যু হয় বড়িশা হাইস্কুলের প্রাথমিকের পড়ুয়া সৌরনীল সরকারের। বাবার সঙ্গে রাস্তা পেরোনোর সময় বেপোরোয়া গতিতে আসা লরিটি পড়ুয়াকে ধাক্কা মেরেছিল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। গুরুতর জখম অবস্থায় এসএসকেএমের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছিল বাবা সরোজকুমার সরকার। পরে সাঁতরাগাছি থেকে গ্রেফতার করা হয় ঘাতক গাড়ির চালক মনোজ মণ্ডলকে। আর এই শিশু পড়ুয়ার মৃত্যু ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড ঘটে যায়। মৃতদেহ উদ্ধারে এলে পুলিশের গাড়ি ও একের পর এক বাইকে অগ্নিসংযোগ করে উত্তেজিত জনতা। একাধিক সরকারি বাসে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। মৃতদেহ আটকে রেখে তুমুল বিক্ষোভও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী, র‍্যাফ নামানো হয়েছিল। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা পুলিশের। স্থানীয় বাসিন্দার পাশাপাশি আক্রান্ত হল পুলিশও। কষুব্ধ জনতার অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরই ঘাতক লরিটিকে আটক করার চেষ্টা করলেও পুলিশ সেটিকে ছেড়ে দেয়। তাঁদের দাবি, পুলিশি উদাসীনতার কারণেই এই দুর্ঘটনা। পুলিশ তোলাবাজিতে ব্যস্ত, বলে অভিযোগ  ক্ষুব্ধ অভিভাবক থেকে বাসিন্দাদের। পুলিশ ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে বড়িশা হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। সেখান থেকে তাদের পুলিশ বের করার চেষ্টা করলে, নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। ২ ঘণ্টার বেশি সময় পর শিশুর মৃত দেহ উদ্ধার করতে পেরেছিল পুলিশ। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে অবরুদ্ধ ডায়মন্ড হারবার রোড চালু হয় প্রায় ৩ ঘণ্টা পর।


আরও পড়ুন: WB School: চারপাশে আবর্জনার স্তূপ, পোড়ো বাড়ির চেহারা নিয়েছে বিল্ডিং, পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে স্কুল