নয়াদিল্লি : অপারেশন সিঁদুরের পর প্রথম ত্রিদেশীয় সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রবিবার তিনি সাইপ্রাস পৌঁছান। তিন দেশের এই সফরে ক্রোয়েশিয়া ও G7 সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডা যাবেন মোদি। তবে, সাইপ্রাসকে প্রথম গন্তব্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর বেছে নেওয়াকে ভৌগলিক-রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর সাইপ্রাস সফর তুরস্কের প্রতি বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব চলাকালীন পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। ভারতের সঙ্গে সামরিক লড়াইয়ে পাকিস্তানকে সাহায্য করেছে তারা। তারপর থেকে ভারতজুড়ে তুরস্কের প্রতি শুধু ক্ষোভ ছড়াই নয়, সংশ্লিষ্ট দেশের পণ্য বয়কটের খবরও এসেছে একের পর এক। 

তবে, প্রধানমন্ত্রী মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডোলিড। প্রায় ১০০ জনের প্রতিনিধি দল নিয়ে সাইপ্রাস সফরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে মোদিকে সে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান দ্য গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য অর্ডার অফ মাকারিওস তৃতীয় (The Grand Cross of the Order of Makarios III) সম্মানে সম্মানিত করা হয়েছে। আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, দুই দশকের বেশি সময়ের পর কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর এটা প্রথম সাইপ্রাস সফর। ১৯৮২ সালে সাইপ্রাস সফরে গিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী এবং ২০০২ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক থাকলেও, এই পর্যায়ের বৈঠক অন্যতম বিরল ঘটনা।

সফরে গিয়ে প্রথমেই সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক সেরে নেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। রাজধানী নিকোসিয়ায় হয় বৈঠক। এরপর সাইপ্রাসের বন্দর শহর লিমাসোলে সে দেশের ব্যবসায়িক মাথাদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন। 

কিন্তু, প্রধানমন্ত্রীর সাইপ্রাস সফর গুরুত্বপূর্ণ কেন ? কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও তুরস্কের সম্পর্ক মজবুত হয়েছে। কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। এমনকী সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের সময়ও সরাসরি পাকিস্তানের হয়ে কথা বলেছে তুরস্ক। অন্যদিকে, সন্ত্রাসবাদে বিরোধিতা করেছে সাইপ্রাস। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার নিন্দা করেছে সাইপ্রাস। পাকিস্তানের জঙ্গি মদতের কথা নিয়ে ইউরোপিও ইউনিয়নে আলোচনার কথাও বলেছে তারা। প্রসঙ্গত, ১৯৭৪ সাল থেকে তুরস্কের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে উত্তজেনা রয়েছে সাইপ্রাসের। এর আগে তুরস্ক সাইপ্রাসে সামরিক হামলা চালালেন, পাল্টা জবাব দেয় সাইপ্রাস। তারপর থেকে পুরোপুরি বাহিনী সরায়নি তুরস্ক। এরপর দ্বীপরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব অংশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে। উত্তর সাইপ্রাসের তুরস্ক রিপাবলিক হিসাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যে অংশকে শুধু তুরস্কই স্বীকৃতি দেয়।