কলকাতা: রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে সরানো হল দিলীপ ঘোষকে। ২০১৫ সালে প্রথমবার রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পর দ্বিতীয়বার এই পদে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। সেই মেয়াদ ফুরনোর আগেই দায়িত্ব থেকে সরানো হল দিলীপ ঘোষকে।


২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বঙ্গ বিজেপির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের পর দ্বিতীয় দফায়, বিজেপির রাজ্য সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। 


২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পর, মেয়াদ ফুরনোর আগেই, সেই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দিলীপ ঘোষকে। তাঁকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি করা হল। 


দিলীপ ঘোষের দাবি, জে পি নাড্ডা সোমবার দুপুরেই তাঁকে জানান, যে তাঁকে জাতীয় স্তরে দায়িত্ব দেওয়া হবে।  রাতে সর্বভারতীয় সহ সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে, রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব থেকে সরানো হয় দিলীপ ঘোষকে। 


১৯৬৪ সালের ১ অগস্ট দিলীপ ঘোষের জন্ম পশ্চিম মেদিনীপুরের কুলিয়ানা গ্রামে। স্কুলের পর্ব শেষ করেই প্রচারক হিসেবে আরএসএসে যোগ দেন তিনি। 


আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে আরএসএস-এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। প্রাক্তন আরএসএস প্রধান কে এস সুদর্শনের সহকারী হিসেবেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন দিলীপ ঘোষ। 


২০১৪ সালে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর, তাঁকে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক করা হয়। বিধানসভা ভোটের আগে, ২০১৫ সালে রাজ্য বিজেপির সভাপতি নিযুক্ত করা হয় দিলীপ ঘোষকে। 


২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে খড়গপুর সদর কেন্দ্রে প্রার্থী হন দিলীপ ঘোষ। প্রথমবার ভোটে লড়েই জ্ঞান সিং সোহন পালের মতো বর্ষীয়াণ কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে বিধায়ক হন তিনি। 


প্রথম দফায় রাজ্য সভাপতি হিসেবে তাঁর মেয়াদ ছিল ২০১৮ পর্যন্ত। কিন্তু, সামনে লোকসভা ভোট থাকায়, তখন সভাপতি নির্বাচনে যায়নি বিজেপি। 


২০১৯-এর লোকসভা ভোটে মেদিনীপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় দিলীপ ঘোষকে। এবারও লোকসভার প্রথম লড়াইয়েই মানস ভুঁইয়াকে হারিয়ে, জয়ী হন তিনি। 


দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে লোকসভা ভোটে লড়েই ২ থেকে বাংলায় ১৮-য় পৌঁছয় বিজেপি। এই লোকসভা ভোটের পর, দিলীপ ঘোষকে দ্বিতীয়বার রাজ্য সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিধানসভা ভোটে বিজেপির স্বপ্নপূরণ না হলেও, তাঁর সভাপতিত্বে লড়ে ৩ থেকে ৭৭-এ পৌঁছয় গেরুয়া শিবির। 


তবে দিলীপ ঘোষ একদিকে যেমন সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন, তেমন হুমকি-হুঁশিয়ারির জন্য বারবার বিতর্কে জড়িয়েছেন।  আবার বিধানসভা ভোটের আগে এ রাজ্যে এসে দিলীপ ঘোষের প্রশংসা করেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। 


বিধানসভা ভোটে হতাশাজনক ফলের পর, বিজেপিতে ভাঙন শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরাল বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। 


আরও পড়ুন: বিজেপি রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরানো হল দিলীপ ঘোষকে


আরও পড়ুন: ‘বাবুলকে স্ট্রাইকার করেছিলাম, গোল করতে পারেননি’, কটাক্ষ দিলীপ ঘোষের


আরও পড়ুন: ''নন্দীগ্রামের ফল ভবানীপুরেও হবে'', উপনির্বাচনে প্রিয়ঙ্কার প্রচারে বেরিয়ে বললেন দিলীপ