দীপক ঘোষ, কলকাতা: তিন কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপিতে বড়সড় রদবদল। রাজ্য বিজেপির সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল দিলীপ ঘোষকে। তাঁর জায়গায় রাজ্য বিজেপির সভাপতি করা হল বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে দিলীপ ঘোষের মেয়াদ ছিল ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু, তার আগেই আচমকা, দিলীপ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হল। তাঁকে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি করা হয়েছে।
এই ঘোষণার পর ট্যুইটারে সুকান্ত মজুমদারকে অভিনন্দন জানান দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ভারতীয় জনতা পার্টির নতুন রাজ্য সভাপতি হিসেবে ডঃ সুকান্ত মজুমদারকে অভিনন্দন জানাই এবং তার সাফল্য কামনা করি।
ডিসেম্বরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বদল হতে পারে বলে গত কয়েকমাস ধরেই চলছিল জল্পনা। আলোচনা চলছিল, দিলীপ ঘোষের পর কে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছে একাধিক নামের প্রস্তাব রেখেছিলেন খোদ দিলীপ ঘোষই। নাড্ডা নিজেই নাম চেয়েছিলেন দিলীপের কাছে। দলের সূত্রের খবর, রাজ্য সভাপতি পদের দৌড়ে এগিয়েই ছিলেন বালুরঘাটের বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার।
রাজনৈতিক মহলের খবর, বিজেপির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলির দায়িত্ব নির্ধারনের ক্ষেত্রে আরএসএসের সম্মতির একটা বড় ভূমিকা থাকে। এবারও তার অন্যথা হয়নি। দিলীপ ঘোষের মতো সুকান্ত মজুমদারেরও দীর্ঘ আরএসএস যোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, দিলীপ ঘোষের সভাপতিত্বে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে চমকপ্রদ সাফল্য অর্জন করেছিল বিজেপি। রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে উঠে এসেছিল গেরুয়া শিবির।
বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলকে কড়়া টক্কর দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিজেপির আশানুরুপ হয়নি।
২০০ আসনের বেশি জিতে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের দাবি করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু বিজেপিকে থামতে হয়েছে ৭৭ আসনেই, যা লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভা ওয়ারি ফলাফলের থেকে অনেকটাই কম।
তৃণমূল ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। বিধানসভা ভোটের পর থেকে রাজ্য বিজেপিতে অন্তর্কলহ প্রকাশ্যে এসেছে। এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের ঘটনা বাড়ছে।
এই পরিস্থিতিতে দলের হাল আগামীদিনে কে ধরবেন, সে দিকে চোখ ছিল রাজনৈতিক মহলের। কারণ, নয়া রাজ্য সভাপতির নেতৃত্বেই বিজেপি আগামী ২০২৪-র লোকসভা নির্বাচনে লড়াই করবে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি বদল, কে আসবেন দিলীপ ঘোষের পর? জল্পনা তুঙ্গে