আশাবুল হোসেন, কলকাতা : জল্পনার অবসান। তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন সব্যসাচী দত্ত-র। বিধানসভা ভোটের কিছুদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এদিন বিধানসভায় ঘাসফুল শিবিরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমদের উপস্থিতিতে 'ঘর ওয়াপসি' ঘটালেন সব্যসাচী দত্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিধায়ক হিসেবে শপথের পরই তাঁর সঙ্গে দেখা করে 'অনুমতি' নিয়েই সব্যসাচী দত্ত 'ঘরে ফিরলেন' বলে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিয়ে স্বাগত জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়-ফিরহাদ হাকিমরা।
তৃণমূলে যোগদান করে সব্যসাচী দত্ত বলেছেন, 'দলের সঙ্গে মাঝে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, যা থেকে আবেগতাড়িত হয়ে অন্য দলে গিয়েছিলাম। আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের আবার আমাকে দলে গ্রহণ করলেন। বাকিরাও সবাই স্বাগত জানালেন। দল যেভাবে বলবে সেভাবেই আগামী দিনে কাজ করব।' পাশাপাশি দীর্ঘদিন তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করার বিষয়ও উল্লেখ করেন তিনি। যে প্রসঙ্গ উঠে আসে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাতেও। গত বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগর কেন্দ্রে সুজিত বসুর বিরুদ্ধে ভোটের লড়াইয়ে নেমে পরাস্ত হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত।
বুধবারই বেসুরো সুর শোনা গিয়েছিল সব্যসাচী দত্ত-র গলায়। লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে সব্যসাচী দত্ত বলেছিলেন, 'কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া পদ্ধতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ। এ তো তালিবান নয়! লখিমপুরের ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক, দোষীদের ফাঁসি দেওয়া উচিত।' তাঁর যে বক্তব্যের পরই উসকে উঠেছিল দলবদলের সম্ভাবনা। যা আরও কিছুটা উসকে দিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, 'দেখুন ষষ্ঠী পর্যন্ত কী হয়।' যদিও ষষ্ঠী পর্যন্ত অপেক্ষার আগেই 'ঘরে ফিরলেন' সব্যসাচী।
সব্যসাচী দত্ত-র দল ছাড়া যে বিজেপি-র কাছে আরও একটা বড় ধাক্কা তা বলাই যায়। বিধানসভা ভোটের পর থেকেই পদ্ম শিবিরের একাধিক বিধায়ক ঘাসফুল শিবিরে নাম লিখিয়েছেন। তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়-ও। গোটা পরিস্থিতির মাঝে তৃণমূলের একাধিক নেতা মাঝে মধ্যেই বলছেন, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে আসার অপেক্ষায় আরও অনেকে। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যে কোনও দলবদল নিয়ে সিলমোহর দেবেন বলেও বার্তা তাদের।
আরও পড়ুন- 'এটা গণতান্ত্রিক দেশ, তালিবান নয়', লখিমপুরের ঘটনা নিয়ে দিলীপের সমালোচনায় সব্যসাচী