কলকাতা: বৈঠকে উপস্থিত প্রবীণ রাজনীতিক শিশির অধিকারী। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে চললেন, পূর্ব মেদিনীপুরে দলবিরোধী কাজকর্ম বরদাস্ত করা হবে না। কড়া হাতে দমন করা হবে। নিতে হবে উপযুক্ত ব্যবস্থা। শুভেন্দু অধিকারীর নাম না করলেও মমতার মন্তব্য যে ভীষণই ইঙ্গিতপূর্ণ, তা এক কথায় মেনে নিচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের সকলেই।


মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। ছেড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদ। শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূল হাইকম্যান্ডের দূরত্ব ক্রমশ বেড়েছে গত কয়েকদিনে। এমনকী, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর ও সৌগত রায়ের মধ্যস্থতায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু মুখোমুখি বসে বৈঠক করলেও বরফ গলেনি। উল্টে টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। বৈঠকের পর একদিকে যখন সৌগত সমস্যা মিটে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছিল শুভেন্দুর গলায়। তিনি সেই বৈঠকের পরের দিনই সৌগতকে হোয়াটসঅ্যাপে জানান যে, তিনি একসঙ্গে কাজ করতে পারছেন না। তাঁকে তৃণমূল কংগ্রেসে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল বলে ধন্যবাদও জানান।

সেদিনের পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে জল্পনা চলছিল, শুভেন্দুকে নিয়ে কতদিন ধোঁয়াশা বজায় রাখবে তৃণমূল। তবে মমতার শুক্রবারের মন্তব্য বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ এবং তা এই প্রসঙ্গে দলের অবস্থানও অনেকটা স্পষ্ট করে দিয়েছে বলে মত সকলের।

শুক্রবার কালীঘাটে সমস্ত জেলার তৃণমূল জেলা সভাপতি, বিধায়ক ও সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শিশির অধিকারী। সেখানেই মমতা বলেন, ‘কাঁথি, হলদিয়া, নন্দীগ্রামে দলবিরোধী কাজে ব্যবস্থা নিন। দলবিরোধী কাজে যুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। বিজেপি এজেন্সি দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। বিজেপির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। যাঁরা সাহস করে আমার সঙ্গে থাকতে চান, থাকুন। যাঁরা লুঠেরাদের সঙ্গে যেতে চান, চলে যান।’ মমতা যে নাম না করে শুভেন্দু ও তাঁর অনুগামীদের বার্তা দিয়েছেন, সে ব্যাপারে রাজনৈতিক মহলের সকলেই নিশ্চিত। আরও তাৎপর্যপূর্ণ যে, মমতা এই কথা বলেছেন পূর্ব মেদিনীপুরকে কার্যত তৃণমূলের গড় হিসাবে গড়ে তোলা অধিকারী পরিবারের প্রধান তথা প্রবীণ রাজনীতিক শিশিরের সামনে।