কলকাতা: মমতার একসময়ের কিচেন ক্যাবানিটের সদস্যের মুখে ক্যাপসুল লিফটের প্রসঙ্গ। ভোটের মুখে কার উদ্দেশে বার্তা দিলেন মদন মিত্র? তুঙ্গে জল্পনা। তৃণমূলে এখন মেকআপ তোলার পালা। রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রীর মন্তব্যে জল্পনা বেড়েছে।


সম্প্রতি তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেছিলেন, ‘প্যারাস্যুট করেও নামিনি। লিফটে চড়েও উঠিনি। সিঁড়ি দিয়ে ধাপে ধাপে উঠে আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছি।’ সোমবার মদন মিত্র বলেছেন, ‘তৃণমূলে সবাই ড্রেসিংরুমে রয়েছে। মেকআপ তোলার পালা চলছে। তবে আমার নাম মদন মিত্র, আমি বেইমান নই।’

দু’জনই রাজ্যের প্রাক্তন পরিবহণমন্ত্রী! একজন প্রায় ছ’বছর আগে মন্ত্রিত্ব থেকে সরেছেন। অপরজন সদ্য ছেড়েছেন পরিবহণ মন্ত্রীর দায়িত্ব। সেই শুভেন্দুকেই এদিন সরাসরি চ্যালেঞ্জ করলেন তাঁর প্রাক্তনী। মদন বলেছেন, ‘শুভেন্দুকে বলতে চাই, আমি নন্দীগ্রামে দাঁড়াচ্ছি। তুই কামারহাটিতে দাঁড়া। দুজনই নির্দল প্রার্থী হব। জনপ্রিয়তার খেলা খুব বিপদ, এটা প্রমাণ হয়ে যাবে। দড়ি বেশি টানতে নেই ছিঁড়ে যায়। ২০১৩তে মন্ত্রিত্ব ছেড়েছি। এটা ২০২০। আমার ডায়ে বাঁয়ে কোনও জেড প্লাস বা কিছু নেই। সিকিউরিটির প্রয়োজন পড়ছে না।’

সম্প্রতি ফেসবুকে চায়ের কাপ হাতে ছবি পোস্ট করেন মদন মিত্র। ছবির ক্যাপশনে লেখা, টাইম ফর প্যাক আপ। এই ক্যাপশন নিয়েই শুরু হল জল্পনা। এদিন তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন মদন মিত্র। কিন্তু, তা বলতে গিয়ে যা বলেছেন, তাও যথেষ্ট ইঙ্গিতপূর্ণ! ক্যাপসুল লিফটের প্রসঙ্গ তুলে মদন আসলে কোন হেভিওয়েটনকে নিশানা করলেন, তা নিয়ে কিন্তু জল্পনা জোরাল হয়েছে।

মদন বলেছেন, ‘প্যাক আপ বলতে আমার পা হড়কে সুইমিংপুলে পড়ে যাওয়া নয়। প্যাক আপ ফর ফাইট ব্যাক। আমি মিছিল করছি, পতাকা নিচ্ছি, আমি দলের সম্পদ। আর তৃণমূলে যারা পতাকা নিচ্ছে না, বিরোধিতা করছে, তারাও দলের সম্পদ! তাই গোলমাল হচ্ছে। এখান থেকেই প্যাক আপটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। নতুন যাত্রা তো শুরু করতেই হবে। চপারে আমি একবার উঠেছি, তবে ক্যাপসুল লিফট আমার বাড়িতে নেই। কথায় কথায়, কলকাতা থেকে মালদা-মুর্শিদাবাদ যাই না। চপারে করে কলকাতা ছাড়ার ভাগ্য আমার নেই। তবে, কেউ আছে আলিপুরে, কেই বারুইপুরে, কেউ ভবানীপুরে। গেট রেডি ফর প্যাক আপ।’

তৃণমূলের একের পর এক বিধায়ক যখন প্রশান্ত কিশোর সম্পর্কে অসন্তোষ উগড়ে দিচ্ছেন, তখন এ প্রসঙ্গেও স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বাক্যবাণ ছুঁড়ে দিয়েছেন মদন। বলেছেন, ‘পিকে দলের স্ট্রাটেজি ঠিক করবে। কিন্তু কামারহাটির মানুষকে কেমন করে কাছে পাব, সেটা পিকে আমায় শেখাবে? এটা ভাবলে ভুল। কাল যদি হনুমান মন্দিরের উদ্বোধনে যাই, সেখানে কালো সালোয়ার পড়ব না, কমলা টিপ পড়ব, সেটা আমার উপর নির্ভর করে।’

একসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিচেন ক্যাবিনেটের সদস্য ছিলেন। কিন্তু, সারদাকাণ্ডে গ্রেফতারি, বিধানসভা ভোটে হার, এসবের পর কিছুটা পিছনের সারিতে চলে গিয়েছেন মদন মিত্র। ভোটের মুখে মুখ খুলে মদন যা বললেন, তা কিন্তু যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।