সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : এসএসসির পর এবার প্রাথমিক নিয়োগ মামলাতেও উঠল 'যোগ্য-অযোগ্য' প্রসঙ্গ। কারা 'বিশেষ সুবিধা' পেয়েছেন, কারা পাননি সেটা কীভাবে আলাদা করব? প্রশ্ন করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী। আমরা কোনও 'বিশেষ সুবিধা' পাইনি বলে দাবি করলেন ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশের আইনজীবী। তখনই বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন যে কারা "বিশেষ সুবিধা" পেয়েছে আর কারা পায়নি সেটা কীভাবে আলাদা করব ? একইভাবে এসএসসি মামলা চলাকালীন বিচারপতি দেবাংশু বসাকও বারবার স্কুল সার্ভিস কমিশনকে প্রশ্ন করেছিলেন যে 'যোগ্য-অযোগ্য' আলাদা করা যাবে ? চূড়ান্ত রায়ে ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছিল যে, চাল আর কাঁকড় আলাদা করা সম্ভব হচ্ছে না বলে পুরো প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিতে বাধ্য হচ্ছে ডিভিশন বেঞ্চ।

বিস্তারিত...

স্কুল সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি-র মামলাতে যেভাবে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছিল, যে মামলাতেও যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা কীভাবে সম্ভব সেই প্রশ্ন উঠেছিল, এখন প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলাতেও আজ বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী একই প্রশ্ন তুলেছেন। একজন আইনজীবী যিনি এই ৩২ হাজার চাকরিহারাদের একাংশের হয়ে ছিলেন, তিনি বলেন যে তাঁর যাঁরা মক্কেল রয়েছেন অর্থাৎ যাঁরা চাকরিহারা ব্যক্তি রয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষকরা রয়েছেন, তাঁরা কোনও রকম বিশেষ সুবিধা গ্রহণ করেননি। অর্থাৎ, তাঁরা যোগ্য প্রার্থী। এক্ষেত্রে তাঁরা বলেন যে, এরমধ্যে দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে, অযোগ্য প্রার্থী থাকতে পারেন, কিন্তু তাঁর যাঁরা মক্কেল রয়েছেন তাঁরা যোগ্য প্রার্থী। সেই সময় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী প্রশ্ন করেন যে, এখানে যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা কীভাবে সম্ভব হবে ?  একইভাবে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মামলাতেও বিচারপতি দেবাংশু বসাক প্রশ্ন করেছিলেন যে, এই যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা কী করে সম্ভব। সেই সময় স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে এই যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করে তালিকা কলকাতা হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের কাছে পেশ করা সম্ভব হয়নি। তার ফলস্বরূপ, বিচারপতি দেবাংশু বসাক ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করেছিলেন। তিনি তাঁর নির্দেশনামায় এই পর্যবেক্ষণও করেছিলেন যে, চাল থেকে কাঁকড় আলাদা করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণেই তিনি ২৬ হাজার চাকরি বাতিল করতে বাধ্য হন। এখন প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের মামলাতেও একই প্রশ্ন উঠল। আগামী ২১ অগাস্ট এই মামলার পরবর্তী বিচারপ্রক্রিয়া কলকাতা হাইকোর্টে হবে।