নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধীর (Rahul Gandhi) সাংসদ পদ খারিজ ইস্যুতে, 'প্রতিহিংসার' অভিযোগ তুলে দেশজুড়ে সত্যাগ্রহের ডাক দিয়েছে কংগ্রেস। এদিন রাজঘাট থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন বলেন প্রিয়ঙ্কা (Priyanka Gandhi Vadra)। তিনি বলেন, 'দেশের প্রধানমন্ত্রী কাপুরুষ।'


প্রিয়ঙ্কা এদিন বলেন, 'আমার বিরুদ্ধেও মামলা করুন। জেলে নিয়ে যান আমাকেও। কিন্তু আসল কথা হল দেশের প্রধানমন্ত্রী কাপুরুষ। ক্ষমতার আড়ালে মুখ লুকিয়ে রয়েছেন। অহঙ্কারে পরিপূর্ণ। আর অহঙ্কারী রাজাকে মুখের মতো জবাব দেওয়া এই দেশের বরাবরের সংস্কৃতি।' প্রসঙ্গত, রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদে দিল্লির রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিস্থলে কংগ্রেসের সঙ্কল্প সত্যাগ্রহের অনুমতি দিল না পুলিশ।


১৪৪ ধারা জারি থাকার কারণে অনুমতি মেলেনি বলে পুলিশের দাবি। যদিও কংগ্রেস সূত্রে খবর, এর আগে এই কর্মসূচিতে অনুমতি দেয় পুলিশ। তবে অনুমতি না মিললেও রাজঘাটে সঙ্কল্প সত্যাগ্রহ হবে বলে কংগ্রেসের তরফে জানানো হয়েছে। এই ইস্যুতে প্রতিবাদে ট্যুইট করেছেন কংগ্রেস সাংসদ ও দলের সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল।


তিনি লেখেন, সংসদে আমাদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করার পর, সরকার আমাদের বাপুর সমাধিতেও শান্তিপূর্ণ সত্যাগ্রহ করতে দিতে অস্বীকার করেছে। বিরোধীদের প্রতিবাদে বাধা দেওয়া মোদি সরকারের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এভাবে ভয় দেখিয়ে আমাদের থামানো যাবে না। সত্যের জন্য, স্বেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। ট্যুইটে লেখেন কংগ্রেস সাংসদ কে সি বেণুগোপাল।


বিজ্ঞপ্তি জারি লোকসভার সচিবালয়ের। মোদিকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে গতকালই সাজা শুনিয়েছিল সুরাতের আদালত। রাহুলকে ২ বছরের কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল আদালত। ২ বছরের জেলের সাজার পরেই জামিন পান রাহুল গাঁধী। এই ইস্যুতে অধীর চৌধুরী বলেন, 'রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি মোদি সরকারের।' অধীর চৌধুরী আরও বলেন,' এটা প্রতিহিংসার রাজনীতি। মূলত  যেহেতু রাহুল গাঁধী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন, বিশেষ করে ভারত জোড়ো যাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে হজম হয়নি মোদি সরকারের। এটা একটি স্বৈরাচারী সরকারের নিষ্ঠুর প্রদর্শন।' এ প্রসঙ্গে বিজেপি রাহুলকে তীব্র আক্রমণ করলেও, নিজের অবস্থানে অনড় কংগ্রেস সাংসদ।


২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের প্রচারে মোদি পদবি নিয়ে মন্তব্য় করেছিলেন রাহুল গাঁধী। তিনি বলেছিলেন, সব চোরেদের পদবি মোদি কেন। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করেন গুজরাতের বিজেপি বিধায়ক এবং প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি। সেই মামলার রায় ঘোষণার জন্য়, বৃহস্পতিবার সকালেই গুজরাতের সুরাত আদালতে পৌঁছান রাহুল। 


লন্ডনে ভারতীয় গণতন্ত্র নিয়ে মন্তব্যের প্রেক্ষিতে, রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে কার্যত সংসদ অচল করে রেখেছে বিজেপি শিবির। ভারত জোড়ো যাত্রায়, নারী নির্যাতন নিয়ে মন্তব্য়ের প্রেক্ষিতে তথ্য জানতে, সম্প্রতি রাহুল গান্ধীর দুয়ারে পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লি পুলিশ। বৃহস্পতিবার পুরনো মন্তব্য়ের প্রেক্ষিতে তাঁকে সাজা শোনায় গুজরাতের আদালত। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর জামিন মঞ্জুর হয়।


আরও পড়ুন, নিজেকে 'অযোগ্য' বললেন, পাল্টে ফেললেন ট্যুইটার বায়ো, চমক রাহুলের


অপরদিকে, 'সত্যি কথা বলার সাজা পেলেন রাহুল',বিপক্ষের কণ্ঠস্বর রোখার চেষ্টা, মন্তব্য মল্লিকার্জুন খাড়গের।  বিজেপিকে একহাত নেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি আরও বলেন, 'ওঁকে (রাহুল গান্ধী) খারিজ করার সব চেষ্টাই করেছে ওরা(বিজেপি)। যাঁরা সত্যি বলছেন, তাঁদের রাখতে চান না ওঁরা। কিন্তু, আমরা সত্যিটা বলে যাব। আমরা জেপিসি-র দাবি করব। প্রয়োজন পড়লে গণতন্ত্র রক্ষা করতে আমরা জেলে যাবো।'