নয়াদিল্লি: কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি দিলেন কৃষকরা। তিনটি বিতর্কিত কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে প্রায় ২ সপ্তাহব্যাপী রাজপথে নামা কৃষক সংগঠনগুলি অনড়। সিঙ্ঘু সীমান্তে সাংবাদিকদের ডেকে তাঁরা দাবি পূরণ না হলে রেল অবরোধ করবেন বলে ঘোষণা করেছেন। কৃষক নেতা বুটা সিংহ আন্দোলন তীব্রতর করার হুঁশিয়ারি দিয়ে রাজধানী দিল্লিমুখী সব হাইওয়ে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন। বলেছেন, আমাদের দাবি না মিটলে রেললাইন অবরোধ করব। দিনক্ষণ শীঘ্রই স্থির করে জানিয়ে দেব। সিঙ্ঘু সীমান্তেই অবস্থান করছেন কৃষকরা। নতুন কৃষি আইন মান্ডি ব্যবস্থা ও ফসল সংগ্রহের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) সিস্টেমকে দুর্বল করে কর্পোরেটদের সুবিধা করে দেবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কৃষকরা। দিল্লির নানা সীমান্ত এলাকা আটকে বসে আছেন তাঁরা। বলবীর সিংহ রাজেওয়াল নামে আরেক কৃষক নেতার ক্ষোভ, কেন্দ্র স্বীকার করেছে, ব্যবসায়ীদের জন্যই আইনগুলি তৈরি হয়েছে। কৃষি যদি রাজ্যের বিবেচনাধীন বিষয় হয়, তবে কেন্দ্রের তার ওপর আইন তৈরির এক্তিয়ারই নেই।
যদিও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর অবশ্য ফের দাবি করেছেন, গত সেপ্টেম্বর সংসদে অনুমোদিত নয়া আইনে উপকার হবে কৃষকদের। কৃষি আইন নিয়ে অচলাবস্থা দূর করতে সরকার আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। কৃষকদেরও তিনি সরকার কৃষি আইনে যে সংশোধনীগুলি আনার কথা ভাবছে, সেগুলির খসড়া পড়ে দেখার আবেদন করে আলোচনার দিন স্থির করার কথা বলেন। তোমর বলেন, কৃষক ইউনিয়নগুলিকে আলোচনার দিন ঠিক করতে বলছি। আমরা তাদের কথা শুনতে প্রস্তুত। নয়া আইনে এপিএমসি আইন বা ন্যূনতম সহায়ক মূল্য (এমএসপি) ব্যবস্থায় কোনও প্রভাব পড়বে না। কৃষকদের আমরা একটা প্রস্তাব পাঠিয়েছি, কিন্তু তারা চায় আইনগুলি বাতিল হোক। আমাদের অবস্থান হল, যে যে ধারায় ওদের আপত্তি আছে, সেগুলির ওপর সরকার খোলা মনে আলোচনায় রাজি। এপিএমসি বা এমএসপি-র ওপর আইনগুলির কোনও প্রভাব পড়বে না। এটা কৃষকদের বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করেছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী এবং আমি কৃষকদের আশ্বস্ত করেছি যে, এমএসপি বহাল থাকবে।
তোমার কেন্দ্রের ঘোষিত অবস্থানের প্রতিধ্বনি করে আরও বলেন, আইনগুলি পাশ করা হয়েছে যাতে কৃষকদের মান্ডি সিস্টেম থেকে মুক্ত করা যায়, তারা বাজারের বাইরে ফসল বেচতে পারে। তোমর বলেন, দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে চাষির জমি শিল্পপতিরা দখল করে নেবে। কিন্তু চুক্তি চাষ দীর্ঘদিন ধরেই চলছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, পঞ্জাব, কর্ণাটকে। কিন্তু কোথাও এমন অভিজ্ঞতা হয়নি। সাংবাদিক বৈঠকে আরেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গয়াল মোদি সরকার দেশের কৃষকদের প্রতি দায়বদ্ধ আছে, থাকবে বলেও আশ্বাস দেন। বলেন, কৃষকদের কোনও বাধ্যবাধকতায় বেঁধে রাখা হচ্ছে না, তাদের কৃষিপণ্য বেচার একটা অপশন দেওয়া হচ্ছে।