নয়াদিল্লি : বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের জবাবি ভাষণে, বারবার নাম না করে রাহুল গাঁধীকেই ( Rahul Gandhi )  নিশানা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ( Narendra Modi ) । বৃহস্পতিবার লোকসভায় তিনি বলেন, 'বছরের পর বছর একই ব্য়র্থ প্রোডাক্ট লঞ্চ করা হচ্ছে।' বিরোধীদের ইন্ডিয়া ( INDIA )  জোট নিয়ে নানাভাবে কটাক্ষ ছুড়ে দেন তিনি। মণিপুর ইস্য়ুতে বুধবার লোকসভায় নরেন্দ্র মোদিকে কড়া ভাষায় নিশানা করেছিলেন রাহুল । আর তার পরদিন দুঘণ্টারও বেশি সময়ের ভাষণের ছত্রে ছত্রে, তাঁকে পাল্টা আক্রমণের রাস্তায় প্রধানমন্ত্রী! 

ঠিক তার পরদিনই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ার পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিলেন রাহুল গাঁধী। সাংবাদিক বৈঠক করে রাহুল বললেন, 
'মণিপুর জ্বলছে, প্রধানমন্ত্রী সংসদে হেসে হেসে জোকস বলছেন! এমন আচরণ প্রধানমন্ত্রীকে শোভা দেয় না'। ("I heard PM Modi speaking in Parliament. He was cracking jokes, laughing with NDA MPs sloganeering) মণিপুর ইস্যুতে বুধবারও বাছাবাছা উপমায় প্রধানমন্ত্রীকে বিদ্ধ করেছিলেন রাহুল। শুক্রবার আবার তিনি বললেন, 'মণিপুর আজ একটা রাজ্য নয়। রাজ্য দুভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে ... দেশে কী হচ্ছে জানেনই না প্রধানমন্ত্রী'। 

রাহুলের দাবি, 'সেনাকে মণিপুরের গন্ডগোল থামাতে বললে, দু'দিনে সব থেমে যায়। মণিপুর উনি জ্বালাতে চান, তাই এমন করছেন। রাজ্য হিসেবে মণিপুর আর বেঁচে নেই, মণিপুরকে মেরে ফেলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জুড়ে ছিল শুধু নিজের কথা, নরেন্দ্র মোদির কথা। আমাদের লক্ষ্য মণিপুরে চলা হিংসাকে আটকানো, তা যে অস্ত্রেই হোক না কেন' 

রাহুল আরও বলেন, ' আমি গত ১৯ বছর ধরে রাজনীতিতে রয়েছি। আমি সব রাজ্যে গিয়েছি। কিন্তু মণিপুরে আমরা যা দেখছি তা কখনও দেখিনি। হয়ত, আমার এখনই বলা উচিত। আমি যখন মেইতেই এলাকায় গিয়েছিলাম, তখন আমাদের বলা হয়েছিল, আমাদের নিরাপত্তার জন্য কোনও কুকিকে নিয়ে না যেতে। আমাদের বলা হয়েছিল যে মেইতেই এলাকায় কোনও কুকি থাকলে কুকিদের মেরে ফেলা হবে। আর কুকি এলাকায়ও একই অবস্থা ছিল। তাই মণিপুরকে কুকি এবং মেইতেইতে ভাগ করা হয়েছে। রাজ্য  হিসেবে এর অস্তিত্ব নেই। এটা আমি সংসদে বলেছি," বলেন রাহুল গান্ধী।

সংসদে ফিরে, বুধবার মণিপুর ইস্যুতে জ্বলে ওঠেন রাহুল। তীব্র ভাষায়, কড়া কড়া শব্দবন্ধে আক্রমণ করেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে। বলেন, ' মণিপুরে ভারতকে খুন করেছেন নরেন্দ্র মোদি। আপনি রক্ষাকর্তা নন, হত্যাকারী। '  রাহুল সেদিন আরও বলেন, 'রাবণ দুজনের কথা শুনত। মেঘনাদ ও কুম্ভকর্ণ। সেরকমই নরেন্দ্র মোদি দুজনের কথা শোনেন। অমিত শাহ আর আদানি।'  রাহুল বলেন, 'আপনি দেশভক্ত নন, দেশদ্রোহী'। 


১৩৬ দিন পর সংসদে প্রত্য়াবর্তনের পর বুধবার মণিপুর ইস্যুতে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপরে ভাষণের ছত্রে ছত্রে যেভাবে সেদিন নরেন্দ্র মোদিক নিশানা করেছিলেন রাহুল, শুক্রবারও জারি রইল সেই সিলসিলা।