নয়াদিল্লি: ভূরি ভূরি অভিযোগ সত্ত্বেও আদানি গোষ্ঠীকে (Adani Group Crisis) নিয়ে নীরবতা পালন করছে কেন্দ্র। সেই আবহে সংসদে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi)। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দিকে আঙুল তুললেন তিনি। রাহুলের দাবি, আগে আদানির বিমানে ঘুরে বেড়াতেন মোদি। এখন মোদির বিমানে ঘুরে বেড়ান আদানি।
সংসদে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী
মঙ্গলবার লোকসভায় রাষ্ট্রপতির ভাষণের প্রেক্ষিতে জবাবি ভাষণে এমন মন্তব্য করেন রাহুল। তিনি বলেন, “আগে আদানির বিমানে ঘুরে বেড়াতেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এখন মোদিজির বিমানে ঘুরে বেড়ান আদানি। আগে গুজরাতেই হতো, এখন ভারত তথা গোটা বিশ্বে হয়ে চলেছে। বিগত ২০ বছরে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে বিজেপি-কে কত টাকা দিয়েছে আদানি?”
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে আদানির বিমান এবং হেলিকপ্টারে চেপে মোদি প্রচার সারেন বলে আগেও সরব হয়েছেন বিরোধী শিবিরের নেতৃত্ব। এমনকি বিজয়ী হওয়ার পর দিল্লিতে তাঁকে নামতে দেখা গিয়েছিল যে বিমান থেকে, তার গায়েও আদানি গোষ্ঠীর নাম ও প্রতীক আঁকা ছিল। সেই নিয়ে আগেও একাধিক বার প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মোদি।
আদানির হয়ে পড়শি দেশের কাছে মোদি খোদ তদ্বির করেছিলেন বলেও এ দিন অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি বলেন, “২০২২ সালে শ্রীলঙ্কার ইলেকট্রিসিটি বোর্ডের চেয়ারম্যান দেশের সংসদীয় কমিটিকে জানান যে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষ খোদ তাঁকে বলেছিলেন যে, আদানিকে বিদ্যুৎ প্রকল্প তুলে দিতে চাপ দিচ্ছিলেন মোদি। এটা তো ভারতের বিদেশনীতির মধ্যে পড়ে না! এটা আদানির ব্যবসায়িক নীতি।”
রাহুল আরও যোগ করেন, “জাদুবলে হঠাৎ অস্ট্রেলিয়া রওনা দেন মোদিষ স্টেট ব্যাঙ্ক আদানিকে ১০০ কোটি ডলার ঋণ দিয়ে দেয়। তার পর মোদি বাংলাদেশ যান। সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড আদানির সঙ্গে ২৫ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর করে নেয়।“
আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থার একটি রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ সামনে এনেছে
সম্প্রতি আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ সংস্থার একটি রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে করফাঁকি থেকে শেয়ার দরে কারচুপি এমনকি ব্যাঙ্ক ঋণ নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ সামনে আসে। আদানি গোষ্ঠী অভিযোগ খারিজ করলেও, হিন্ডেনবার্গের তরফে তাদের পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছোড়া হয়। এর পরই বাজার থেকে FPO তুলে নেয় আদানি গোষ্ঠী। তার পর থেকে লাগাতার আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু বিরোধীদের প্রশ্নের মুখেও নীরবতা পালন করেছে তারা। সেই আবহে সংসদে নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।