নয়াদিল্লি: কেন্দ্রীয় সরকার এড়ানোর চেষ্টা করলেও, আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group Crisis) বিরুদ্ধে ওঠা কারচুপি এবং জালিয়াতির অভিযোগে সংসদে চাপ বাড়িয়ে চলেছে বিরোধীরা। রকেটের গতিতে আদানি গোষ্ঠীর উত্থানের সঙ্গে এ বার সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। গৌতম আদানিকে সুবিধা করে দিতে দেশের নিয়ম-কানুন বদলে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন রাহুল। শুধু তাই নয়, দেশের বাইরে যাতে আদানি গোষ্ঠী পসার জমাতে পারে, তার জন্য দেশের বিদেশনীতিতেও ছুরি-কাঁচি চালানো হচ্ছে বলে দাবি রাহুলের।
সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাহুল গান্ধী
আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মঙ্গলবারও উত্তাল হয় সংসদ। রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবে এ দিন লোকসভায় বক্তৃতা করেন রাহুল। সেখানেই সরাসরি মোদিকে নিশানা করেন রাহুল। তিনি বলেন, “দেশের যুবসমাজ জানতে চায়, ২০১৪ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে কী এমন কাজ করলেন গৌতম আদানি যে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ৮০০ কোটি ডলার থেকে লাফিয়ে ১৪ হাজার কোটি ডলারে পৌঁছে গেল! কাশ্মীরের আপেল থেকে হিমাচলপ্রদেশের বন্দর, এমনকি মানুষ চলাচলের ফুটপাথ, যে ব্যবসাতেই হাত দিচ্ছেন, একেবারে ফুলেফেঁপে উঠছেন!”
এর পরই সরাসরি আদানির সঙ্গে মোদির হৃদ্যতা নিয়ে সরব হন রাহুল। তিনি বলেন, “নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সেই সময়ই সম্পর্কের সূচনা। একজনই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাঁর পাশে ছিলেন। মোদির বিশ্বস্ত ছিলেন উনি, গুজরাত মডেলের ভাবনা নিয়ে মোদিকে সাহায্য করেন তিনি। কিন্তু আসল জাদু শুরু হয় ২০১৪ সালে, যখন দিল্লিতে আসীন হন মোদি।”
মোদির সঙ্গে সুসম্পর্কের জন্যই আদানির সুবিধার্থে নিয়ম-কানুন পাল্টে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রাহুল। তিনি বলেন, “নিয়ম-কানুনে পরিবর্তন ঘটিয়ে আদানিকে ছয়টি বিমানবন্দর দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সিবিআই, ইডি-কে ব্যবহার করে দেশের সবচেয়ে লাভজনক বিমানবন্দর, মুম্বই বিমানবন্দর GVK-র হাত কাছ থেকে কার্যত ছিনতাই করে সরকারের তরফে আদানির হাতে তুলে দেওয়া হয়। পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়া বিমানবন্দরের উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কাউকে দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু আদানির জন্য সেই নিয়ম পাল্টে ফেলে কেন্দ্রীয় সরকার।”
মোদির সঙ্গে সুসম্পর্কের জন্যই আদানির সুবিধার্থে নিয়ম-কানুন পাল্টে দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন রাহুল
প্রতিরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে মোদি-ঘনিষ্ঠের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে এ দিন অভিযোগ করেন রাহুল। তাঁর কথায়, “প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আগের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই আদানির। গতকাল প্রধানমন্ত্রী বললেন আমরা নাকি মিথ্যে অভিযোগ তুলছি! কিন্তু আসলে অনিল আম্বানিকে ১২৬টি যুদ্ধ তৈরির বরাত দিয়েছে HAL. আদানি জীবেন কখনও ড্রোন তৈরিই করেননি। অথচ HAL এবং অন্য সংস্থাই এতদিন তা করল। তার পরও মেদি ইজরায়েল গেলেন এবং বরাত পেয়ে গেলেন আদানি।”