নয়াদিল্লি: রাহুল গাঁধীকে বছরের ‘সেরা মিথ্যাবাদী’ তকমা বিজেপির। জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার বা এনপিআরকে গরিবের ওপর ট্যাক্স বা ‘কর’ বসানো বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। এজন্য পাল্টা তাঁকে তোপ দাগলেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভরেকর। কংগ্রেস দেশে অস্থিরতা, অনিশ্চয়তার পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ এনেও নতুন নাগরিকত্ব আইন ও এনপিআর ইস্যুতে দেশবাসী মোদি সরকারের পাশেই আছে বলে দাবি করেন তিনি। বলেন, এনপিআরে কোনও আর্থিক লেনদেনের ব্যাপার নেই, তাতে সংগৃহীত তথ্য গরিবদের চিহ্নিত করতে কাজে লাগানো হবে যাতে সরকারের কল্যাণমুখী প্রকল্পগুলি যাদের জন্য তৈরি, তাদের কাছেই পৌঁছয়। ২০১০ সালেও এধরনের প্রক্রিয়া চালানো হয়েছিল বলে দাবি করেন তিনি। আজ সাংবাদিকদের জাভরেকর বলেন, রাহুল কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময় যা মন চাইত, বলতেন এবং সবসময় মিথ্যাই বলতেন। এখন তিনি কংগ্রেস সভাপতি নন, তবে মিথ্যা বলেই যাচ্ছেন। বছরের সেরা মিথ্যাবাদী বলে কোনও ক্যাটাগরি থাকলে সেটা তিনিই হতেন। তাঁর কথাবার্তা তাঁর পরিবারকেই অস্বস্তিতে ফেলে। এখন তাঁর মিথ্যা কথায় তাঁর দল, সারা দেশই বিব্রত হচ্ছে।
আজ শীর্ষ কংগ্রেস নেতা ছত্তিশগড়ের রায়পুরে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) ও এনপিআরকে দেশের গরিবের ওপর ‘হামলা’ বলে মন্তব্য করেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এনআরসি, এনপিআর-যেটাই হোক, তা দেশের গরিব মানুষের ওপর এক ধরনের কর। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত দেশের গরিব জনগণের ওপর একটা করের বোঝা ছিল। এটাও একই ব্যাপার। অফিসারের কাছে যেতে হবে গরিব মানুষকে, তাদের নথিপত্র দেখতে চাওয়া হবে। নামের সামান্য এদিকওদিক হলে ঘুষ দিতে হবে। এভাবে গরিবের কোটি কোটি টাকা যাবে সেই একই ১৫টা লোকের কাছে। এটাকে গরিবের ওপর হামলা বলছি। কী করে কর্মসংস্থান হবে, জিজ্ঞাসা করছে গরিব লোকজন। আগে আর্থিক বৃদ্ধি হচ্ছিল ৯ শতাংশ হারে, এখন তা নেমে ৪ শতাংশ হয়েছে, তাও সেটা নতুন পদ্ধতিতে হিসাবের পর। পুরানো পদ্ধতিতে হিসাব করা হলে এটা ২.৫ শতাংশ।
ছত্তিশগড় সরকার আয়োজিত অনুষ্ঠানের সূচনায় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে সারা দেশে বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে রাহুল বলেন, দেশের অবস্থার কথা সবাই জানেন। অন্য রাজ্যগুলিতে কী হচ্ছে, তাও আপনারা জানেন। কৃষক, অর্থনীতি, বেকারির হাল কী, নতুন করে বলার দরকার নেই। আমি শুধু এটাই বলতে চাই যে, প্রতিটি ধর্ম, জাতি, আদিবাসী, দলিত, পশ্চাত্পদ সমাজের প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়ে না এগলে ভারতের অর্থনীতি চালানো যাবে না। আপনি যা খুশি করুন, কিন্তু যতক্ষণ না সবাইকে সঙ্গে নিচ্ছেন, লোকসভা বা বিধানসভায় মানুষের কথা শুনছেন, যত বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করুন না কেন, বেকারি বা অর্থনীতির ক্ষেত্রে কিছুই করা যাবে না। ‘ভাইয়ের সঙ্গে ভাইকে লড়িয়ে দেওয়া হলে’ কখনই দেশের ভাল হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন রাহুল। আরও বলেন, প্রত্যেক ভাষণে আমি বলি যে, অর্থনীতি চালায় কৃষক, মজুর, গরিব। সব টাকা ১০-১৫টা লোকের হাতে কুক্ষীগত রেখে নোটবন্দি, ভুল ভাবে জিএসটি চালু করলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা, অর্থনীতি চালানো যায় না। আমি খুশি যে, ছত্তিশগড়ে কৃষক বা যুবক বা মা বা বোন, আমরা প্রত্যেককে সঙ্গে নিয়ে এগচ্ছি, রাজ্যটা এগিয়ে যাচ্ছে। পার্থক্যটা সহজেই চোখে পড়ছে। হিংসা কমেছে। ছত্তিশগড়ের অর্থনীতি অন্য রাজ্যগুলিকে ছাড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।