ইম্ফল: অশান্তির আগুনে জ্বলতে থাকা মণিপুরের পরিস্থিতি স্বচক্ষে দেখতে আগামী ২৯-৩০ জুন উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যে আসছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। যাঁরা এই মুহূর্তে ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন, আসন্ন সফরে তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন রাহুল। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনার নির্ঘণ্ট তৈরি হয়েছে। এদিন থেকেই আবার ত্রাণশিবিরে ঠাঁই নেওয়া বাসিন্দাদের জন্য এককালীন ১ হাজার টাকার সাহায্য ঘোষণা করে মণিপুরের এন বীরেন সিংহের সরকার। সেই মতো তা বিতরণও শুরু হয়ে গিয়েছে।
কী বলছেন রাহুল?
কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক কে সি বেণুগোপালের তরফে ট্যুইট করে রাহুলের সফরের ঘোষণা করা হয়। লেখা ছিল, 'গত দু'মাস ধরে মণিপুর জ্বলছে। এবার ক্ষতে মলম লাগানো দরকার যাতে মনুষ্যসমাজ হিংসার থেকে শান্তির দিকে ফিরতে পারে।' গত মাসের গোড়ার দিকে উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে যে জনজাতি সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল তার পর, ৩০০ ত্রাণশিবিরে অন্তত হাজার পঞ্চাশেক মানুষ আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। এদিন তাঁদের জন্য এককালীন আর্থিক সাহায্য়ের কথা ঘোষণা করে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানান, ক্ষতিগ্রস্তরা যাতে নিজেদের জন্য় পোশাক ও প্রয়োজনের ন্যূনতম জিনিসটুকু কিনতে পারেন, সেই জন্যই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই আর্থিক অনুদানে আদৌ সব হারানো মানুষগুলির প্রয়োজন মিটবে তো? হিসেব বলছে, এখনও পর্যন্ত এই সংঘর্ষে অন্তত ১০০ জনের প্রাণ গিয়েছে। কী হবে তাঁদের পরিজনদের? বস্তুত, মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনায় সরব বিরোধী দলগুলি। চলতি মাসের গোড়ার দিক এই পরিস্থিতি সামলাতে মোট ১০১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার স্পেশ্যাল প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু সেটা কি পর্যাপ্ত?
কী কারণে এমন ক্ষোভ:
মণিপুরের বাসিন্দাদের বড় অংশই মেইতেই জনগোষ্ঠীর। তাঁরা মূলত ইম্ফল ও লাগোয়া সমতল এলাকায় বাস করেন। পাহাড়ি এলাকায় থকেন কুকিরা। মেইতেইরা জনজাতি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তাঁরা পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারেন না। কিন্তু কুকিরা সমতল এলাকায় জমি কিনতে পারেন। এবার মেইতেই জনগোষ্ঠী তফসিলি জনজাতিভুক্ত হয়ে গেলে তাঁরাও পাহাড়ি এলাকায় জমি কিনতে পারবেন, সেটাই কুকিদের অসন্তোষের কারণ। কুকিদের দাবি, এন বীরেন সিংহের সরকার তাঁদের ক্রমশ কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে। শুধু মেইতেইদের তফসিলি জনজাতিভুক্ত হওয়ার দাবির বিরোধিতা নয়। আরও একটি কারণে চড়েছে ক্ষোভের পারদ। মণিপুরের পাহাড়ি এলাকায় কুকি জনগোষ্ঠীদের বাস। সেই পাহাড়ি এলাকায় সংরক্ষিত অরণ্য থেকে কুকি জনগোষ্ঠীভুক্ত বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আর সেটা নিয়েই চড়েছে ক্ষোভের পারদ। একাধিকবার বিক্ষোভও দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:তৃণমূল প্রার্থীর বাড়ি থেকে দেড় কেজি বোমার মশলা 'উদ্ধার', ধৃত প্রার্থীর স্বামী