ইম্ফল: নতুন করে গুলি চলেছে। পরিস্থিতি থমথমে। সেই আবহেই মণিপুর থেকে বার্তা দিলেন কংগ্রেস সাংসদ তথা লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গাঁধী। সোমবার হিংসাদীর্ণ মণিপুরে পৌঁছন রাহুল। অশান্তির আবহে এই নিয়ে তৃতীয় বার সেখানে পা রাখলেন তিনি, লোকসভার বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথম বার। আর সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বার্তা দিলেন রাহুল। একবার অন্তত প্রধানমন্ত্রীর মণিপুরে আসা উচিত বলে মন্তব্য করলেন। (Rahul Gandhi in Manipur)


রাহুলের সফরের আগেই নতুন করে অশান্তি ছড়ায় মণিপুরে। জিরিবাম জেলার কাছে ফাইতল গ্রামে গুলি চলে। অস্ত্রশস্ত্র সমেত দু'জনকে গ্রেফতারও করে নিরাপত্তাবাহিনী। গ্রামে কুকি-জো এবং মেইতেদের কয়েটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবরও সামনে আসে। এর কয়েক ঘণ্টা পর সোমবার মণিপুরে পৌঁছন রাহুল। স্থানীয়দের সঙ্গে দেখা করে বলেন, "আপনাদের ভাই হিসেবে আমি এখানে এসেছি। আপনাদের সাহায্য় করতে চাই, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই, তাই এসেছি আমি।" (Manipur Situation)


এর পর সাংবাদিক বৈঠকও করেন রাহুল। সেখানে বলেন, "ভারত সরকার এবং নিজেদের দেশপ্রেমী বলে মানেন যাঁরা, তাঁধের সকলের মণিপুরের মানুষের পাশে থাকা উচিত, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে হবে। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রীর এখানে আসা প্রয়োজন। মণিপুরের মানুষের কথা শোনা উচিত ওঁর। মণিপুরে আসলে কী ঘটছে, বুঝতে হবে।"


আরও পড়ুন: Modi Putin Meet : 'দেশের মানুষের জন্য উৎসর্গ করেছেন জীবন', পুতিনের মুখে মোদি-স্তুতি


রাহুল আরও বলেন, "ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গর্বের রাজ্য মণিপুর। কোনও দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা না ঘটলেও, মণিপুরে প্রধানমন্ত্রীর আসা উচিত। আর এখন যে পরিস্থিতি, প্রধানমন্ত্রীকে আমি অনুরোধ করব, মণিপুরের মানুষের কথা শোনার জন্য অন্তত একটি বা দু'টি দিন সময় বের করুন। এতে মণিপুরের মানুষজন কিছুটা আশ্বস্ত বোধ করবেন।"


২০২১ সালের মে মাস থেকে অশান্ত মণিপুর। এখনও পর্যন্ত ২০০-র বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। অশান্তি চলাকালীন গত বছর জুন মাসে প্রথম বার মণিপুর সফরে আসেন রাহুল। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' নিয়ে আবারও মণিপুর পৌঁছন। লোকসভা নির্বাচন মিটতে সোমবার ফের একদিনের সফরে মণিপুর পৌঁছন। এর আগে লোকসভাতেও মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের অবস্থানের সমালোচনা করেন রাহুল। ঘটনাচক্রে, রাহুল যখন মণিপুরে, সেই সময় বিদেশ সফরে ব্যস্ত রয়েছেন মোদি, রাশিয়া থেকে যাবেন অস্ট্রিয়া।


 


রাহুল জানিয়েছেন, অশান্তি শুরু হওয়ার পর তৃতীয় বার মণিপুর এলেন তিনি। পরিস্থিতি কিছুটা শুধরে গিয়ে থাকবে বলেই আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু মণিপুর পৌঁছে হতাশ হতে হল তাঁকে। অস্থায়ী শিবিরগুলিতে আশ্রিত মানুষজন নিজেদের যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন তাঁর কাছে। বিরোধী শিবিরের প্রতিনিধি হয়ে তিনি সকলের কথা শুনেছেন, আশ্বাস জুগিয়েছেন। সরকারের উপর সেই নিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে বদ্ধপরিকর তিনি।