নয়াদিল্লি: সরাসরি চাষি, পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে নগদ অর্থ দেওয়ার সওয়াল করে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের করোনাভাইরাস সংক্রমণ পর্বে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘোরানোর চেষ্টায় আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণার সমালোচনা করলেন রাহুল গাঁধী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের মেয়াদ তিনবার বেড়েছে। সোমবার থেকে চতুর্থদফার লকডাউন শুরু হতে চলেছে। লকডাউনের ঝিমিয়ে পড়েছে অর্থনীতি। লকডাউনের মধ্যেই অসংখ্য শ্রমিক কাজ-কারবার হারিয়ে হাঁটতে হাঁটতে ঘরের পথে রওনা হয়েছেন।
সেই প্রেক্ষাপটেই প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি আজ সাংবাদিক সম্মেলন করে কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে বলতে গিয়ে গোটা দেশ কঠিন সমস্যায় পড়েছে বলে অভিমত জানান। বলেন, আর্থিক প্যাকেজ লোন দেওয়ায় সীমাবন্ধ থাকলে হবে না, কৃষক ও ঘরমুখী শ্রমিকদের সরাসরি আর্থিক সহায়তা দিতে হবে। তাঁর মতামত রাজনৈতিক নয় বলে দাবি করে রাহুল বলেন, তিনি মোদিকে আর্থিক প্যাকেজ ‘পুনর্বিবেচনা করে’ চাষিদের সরাসরি টাকা দেওয়ায় জোর দিতে আবেদন করছেন।
রেটিং সংস্থাগুলির আর্থিক বৃ্দ্ধির হার কমানোর পূর্বভাসের হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে মোদিকে ‘বিদেশ (রেটিং এজেন্সি) নয়, ভারতের হৃদয়ের দিকে’ নজর দিতে আবেদন করেন রাহুল। বলেন, আমরা এখন কৃষক, শিল্প-বাণিজ্যকে সাহায্য না করে অর্থনীতি চলবে না।
গত মাসে রাহুল কোভিড-১৯ অতিমারীর প্রভাব, ধাক্কা ও তা কী করে সামাল দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে নামী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে দফায় দফায় ভিডিও কনফারেন্স করেন। প্রাক্তন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নর রঘুরাম রাজন, নোবেলজয়ী অর্থনীতি অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। দুজনেই রাহুলের সঙ্গে আলাপচারিতায় গরিবকে সরাসরি বেশি করে টাকা দেওয়ার কথা বলেন। এপ্রিল থেকে বেশ কয়েকবার সাংবাদিক বৈঠক করেও রাহুল করোনাভাইরাস সংক্রমণে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে লাগাতার লকডাউনের বিরোধিতা করেন, বলেন, লকডাউন চালিয়ে যাওয়া সমাধান নয়, কোভিড-১৯ টেস্টিং বাড়াতে হবে। গত সপ্তাহেও রাহুল গরিবকে অবিলম্বে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার দাবি তুলে লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার কৌশল তৈরির প্রয়োজনের কথা বলেন। সামগ্রিকভাবে করোনা ইস্যুতে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে রাহুলের অবস্থান আক্রমণাত্মক। মোদি সরকার প্রথম থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণকে গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বলে ফেব্রুয়ারিতেই অভিযোগ করেছিলেন তিনি।