নয়াদিল্লি: ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধীকে হারাতে হয়েছিল সাংসদ পদ। এ বার সাংসদ পদ গেল তাঁরও। কিন্তু কোনও আক্ষেপ নেই বলে জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। তিনি জানিয়েছেন, এই দেশ তাঁকে সবকিছু দিয়েছে, সে ভালবাসাই হোক বা সম্মান। তাই এই দেশের জন্য সবকিছু করতে রাজি তিনি। সাংসদ থাকুন বা না থাকুন। নিজের দায়িত্ব পালন করে করে যাবেন, জানালেন রাহুল (Parliament Disqualification)।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খোলেন রাহুল
মানহানি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর সাংসদ পদ গিয়েছে রাহুলের। তার পর শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে মুখ খোলেন রাহুল। তাতে তিনি বলেন, "এই দেশ সবকিছু দিয়েছে আমাকে। ভালবাসা, সম্মান, সবকিছু। সাংসদ থাকি না থাকি, আমাকে চিরতরে খারিজ করে দিতে পারেন, কিন্তু আমি আমার কাজ করে যাব। সংসদের ভিতরে থাকি বা বাইরে, দেশের জন্য় লড়াই চালিয়ে যাব।"
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে কর্নাটকে মোদি পদবী নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন রাহুল। নীরব মোদি, রাহুল মোদিদের প্রসঙ্গ টেনে প্রশ্ন তুলেছিলেন, "সব চোরের পদবী মোদি হয় কী করে?" তাতেই গুজরাতের বিজেপি নেতা রাহুলের বিরুদ্ধে মানহানি (অপরাধমূলক) মামলা দায়ের করেন। রাহুল আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মোদি পদবী ব্যবহারকারী সম্প্রদায়কে অপমান করেছেন বলে অভিযোগ করে বিজেপি।
যদিও কংগ্রেসের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়, দেশ লুটে যাওয়া নিয়ে নীরব-ললিতদের নিশানা করেছিলেন রাহুল? রাজনীতিক হিসেবেই ওই মন্তব্য করেন রাহুল। তাতে মানহানির প্রসঙ্গ আসে কী করে? যদিও সেই মামলাতেই রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছে সুরতের আদালত। দু'বছরের সাজা শুনিয়ে, যে কারণে রাহুলের সাংসদ পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। আদালতের এই রায় নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi: 'আমার নাম সাভারকর নয়...', কেন্দ্রকে বার্তা রাহুলের
সেই আবহেই এ দিন, মুখ খোলেন রাহুল। তাঁর কথায়, "আমার সাংসদ পদ খারিজ করা হয়েছে কারণ আমার পরবর্তী ভাষণ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওঁর চোখে ভয় দেখেছি আমি। তাই আমি সংসদে কথা বলি, ওঁরা চান না। আসলে আদানি ইস্যু থেকে নজর ঘোরাতেই এতকিছু। এই সরকারের জন্য় আদানিই দেশ, দেশই আদানি।"
সাংসদ পদ কেড়ে নিয়ে, ভয় দেখিয়ে তাঁকে দমানো যাবে না বলেও মন্তব্য করেন রাহুল। বলেন, "চিরতরে আমাকে খারিজ করে দিন ওঁরা, আজীবন জেলে ভরে দিন, আমি আমার কাজ করে যাব। লড়াই চলবে।" তাঁর সাংসদ পদ খারিজ করে আসলে মোদি সরকার বিরোধীদের সুবিধাই করে দিয়েছেন বলেও মত রাহুলের।
দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে রক্ষা করাই তাঁর কাজ, জানালেন রাহুল
রাহুল জানিয়েছেন, দেশের গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোকে রক্ষা করাই তাঁর কাজ। দেশের প্রতিষ্ঠানগুলির স্বতন্ত্রতা রক্ষা, দরিদ্র মানুষের কণ্ঠস্বর তুলে ধরা এবং মানুষকে সত্যাসত্য জানানো তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাঁকে ভয় পাওয়ানো যাবে না।