রাজস্থান: ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা হতে হতে বেঁচে গেল, কিন্তু এর দাম গিয়ে গেল একটা করুণ হৃদয়বিদারক মৃত্যু। রাজস্থানের পালি জেলায় আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বাসচালকের। জানা গিয়েছে মৃত্যুর সময় তিনি ডিউটিতে ছিলেন। শরীর খারাপ করছিল বলে স্টিয়ারিং ছেড়ে খালাসিকে বাস (Death News) চালাতে বলে তিনি খানিকক্ষণ পাশে বসে ছিলেন। আর এই সময়েই এক ঘণ্টার মধ্যেই হার্ট অ্যাটাক (Heart Attack), মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সেই বাসচালক। সতীশ রাও নামের সেই বাসচালক ইন্দোর থেকে যোধপুরগামী একটি বাস চালাচ্ছিলেন। আর মাঝরাস্তায় হঠাৎ করেই তাঁর শরীর খারাপ হয়ে যায়। অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন তিনি। ঝুঁকি বুঝতে পেরে তিনি তাঁর সহ-চালকের হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং ধরিয়ে দেন এবং তাঁকে বাস (Bus Driver Death) চালাতে বলে পাশে বসেন। আশা ছিল নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যন্ত তিনি বিশ্রাম নেবেন।

কিন্তু সেই বাসচালক ব্যক্তির অবস্থা আরও অবনতি হতে থাকে। বাসের ভিতরের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে তিনি খালাসির পাশে পা মুড়ে বাবু হয়ে বসে রয়েছেন। আর হঠাৎ করেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান। সহযাত্রীদের তাৎক্ষণিক উদ্বেগ সত্ত্বেও সতীশ রাওকে বাঁচানো যায়নি। তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নীরব হৃদরোগই কাড়ল প্রাণ

চিকিৎসকেরা বলেছেন যে সতীশ রাও নীরব হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এটি একধরনের প্রাণঘাতী হৃদরোগ যা কোনো আগাম সতর্কতামূলক লক্ষণ দেখায় না। তাই আগে থেকে শরীর খারাপ বোধ করায় স্টিয়ারিং হুইল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অনেক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছে সেই যাত্রায়। এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। কারণ এটি সম্ভবত ব্যস্ত রুটে অনেক বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে বাঁচিয়েছিল সকলকে। সংবাদসূত্রে জানা গিয়েছে যে খালাসি প্রথমে সাহায্যের জন্য কাছের একটি মেডিকেল স্টোরে থামার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেটি বন্ধ ছিল। ফলে সময়মত চিকিৎসার আশায় হাসপাতালের দিকে যাত্রা করে বাসটি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যান সতীশ রাও নামের সেই বাসচালক। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত তাঁর পরিবার।

সেই সময় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী বাসযাত্রীদের বর্ণনা অনুসারে সতীশ রাও নামের সেই বাসচালক হঠাৎ ঢলে পড়ে যাওয়ার সময় পাশে বসে থাকা এক মহিলা যাত্রী হতবাক হয়ে যান। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বেশ কয়েকজন যাত্রী সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। বাসচালককে বাঁচানোর চেষ্টায় চালকের কেবিন থেকে তাঁকে বের করে আনা হয়। এই বাসের সিসিটিভি ফুটেজ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। নীরব হার্ট অ্যাটাকের অপ্রত্যাশিত প্রভাব এবং যাত্রীদের সুরক্ষায় তাঁর উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা উভয় ঘটনাকেই তুলে ধরেছে।