অযোধ্যা: রামজন্মভূমি আন্দোলনের একেবারে অগ্রভাগে ছিলেন তিনি। কিন্তু অযোধ্যায় নবনির্মিত রামমন্দিরের উদ্বোধনে লালকৃষ্ণ আডবানির ( Lal Krishna Advani) যাওয়া নিয়ে ধন্দ ছিলই। প্রথমে তাঁকে অযোধ্যায় আসতে বারণ করা নিয়ে বিতর্ক বাধে। তার পর আমন্ত্রণ যাও বা পৌঁছয়, তাকে মুখরক্ষার চেষ্টা বলে দাগিয়ে দেন আডবানি অনুরাগীরা। তবে সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন এবং 'রামলালা'র মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে দেখা যাবে না লালকৃষ্ণ আডবানিকে। প্রচণ্ড ঠান্ডার জন্য তিনি অযোধ্যায় মন্দির উদ্বোধনের মূল অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে খবর। (Ram Mandir Inauguration)
৯৬ বছর বয়সি আডবানির অযোধ্যা যাওয়া নিয়ে দোলাচল গোড়া থেকেই। এর আগে, মন্দির নির্মাণের দায়িত্বে থাকা সংগঠন শ্রী রামমন্দির তীর্থক্ষেত্র জানিয়েছিল, আডবানি এবং তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোগী, রামজন্মভূমি আন্দোলনের অন্যতম মুখ মুরলি মনোহর জোশীও অযোধ্যা আসবেন না। দুই বর্ষীয়ান নেতার বয়স এবং স্বাস্থ্যের কথাই সেই সময় বলতে শোনা গিয়েছিল তাদের। শেষ পর্যন্ত অযোধ্যা না যাওয়ারই সিদ্ধান্ত নিলেন আডবানি।
কিন্তু যে ভাবে আডবানি এবং জোশীকে অযোধ্যা আসতে বারণ করা হয়, সেই নিয়ে বিতর্ক বাধে। কারণ রাম মন্দির ট্রাস্টের জেনারেল সেক্রেটারি চম্পত রাইকে গত মাসে বলতে শোনা যায়, "দু'জনেরই বয়স হয়েছে। বয়সের ব্যাপারও আছে। ওঁদের আসতে বারণ করা হচ্ছে। দু'জনে তা মেনেও নিয়েছেন।" এই মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক বাধলে, চলতি মাসের শুরুতে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের তরফে জানানো হয়, আডবানিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র গ্রহণ করেছেন আডবানি। অযোধ্যায় মন্দির উদ্বোধনে শামিল হতে চান তিনি।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের আন্তর্জাতিক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট অলোক কুমার জানান, অযোধ্যায় যাতে আডবানির কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য সবরকমের ব্যবস্থা কার হচ্ছে। জরুরি পরিস্থিতিতে চিকিৎসা পরিষেবারও সুযোগ থাকবে। জোশীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয় অযোধ্যা আসতে। তাঁর আসা নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি রামমন্দির নিয়ে নিডের অনুভূতি প্রকাশ করেন আডবানি। তাঁর দাবি ছিল, অযোধ্যায় রামমন্দিরের নির্মাণ হওয়ারই ছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতেই তার বাস্তবায়ন হল। আডবানির লিখিত বিবৃতিতে এই মুহূর্তের ব্যাখ্যায় লেখা হয়, 'রামমন্দির নির্মাণের মাধ্যমে স্বপ্ন সত্যি হল'। আডবানি জানান, ৩৩ বছর আগে রামমন্দির নির্মাণের দাবিতে যে রথযাত্রার সূচনা করেছিলেন তিনি, তা তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য এবং যুগান্তকারী মুহূর্ত। ওই রথযাত্রার মাধ্যমে ভারতকে নতুন করে আবিষ্কার করেন তিনি। নিজেকেও নতুন করে চিনতে শেখেন।
সোমবার অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন। আজই 'রামলালা' অর্থাৎ রামচন্দ্রের শিশুকালের মূর্তিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় রয়েছেন এই অনুষ্ঠানে। দেশের তাবড় বিশিষ্ট জনেদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মন্দিরের অনুষ্ঠানে। বলিউড তারকা থেকে বিরোধী শিবিরের রাজনীতিকদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়। কংগ্রেস-সহ একাধিক বিরোধী দল যদিও জানিয়েছে, অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠান বিজেপি-র রাজনৈতিক প্রচারমঞ্চে পরিণত হয়েছে। তাই ওই অনুষ্ঠানে যাওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।