মুম্বই: রতন টাটার প্রয়াণে শোকের ছায়া গোটা দেশে। কাছ থেকে চিনতেন না যাঁরা, দীর্ঘশ্বাস ফেলছেন তাঁরাও। প্রবীণ শিল্পপতির প্রয়াণে শোকবিহ্বল বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সিমি গরেওয়াল। একসময় রতন টাটার সঙ্গে মনের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল তাঁর। রতন টাটার মৃত্যুর খবরে কিছুতেই ধাতস্থ হতে পারছেন না তিনি। রতন টাটা নেই, একথা মানতেই পারছেন না বলে জানিয়েছেন। (Ratan Tata Demise)


বুধবার মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রতন টাটা। বার্ধক্যজনিত সমস্যার জেরে দিন তিনেক আগেই রুটিন চেকআপ করাতে গিয়েছিলেন। ভর্তি হওয়ার পর অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। এর পরই বুধবার পৃথিবী থেকে বিদায় নেন রতন টাটা। তাঁর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই নিজের মনের অবস্থার কথা জানান সিমি। (Simi Garewal)


কিছু বছর আগে সিমির টক শো-তে হাজির হন রতন টাটা। সেখানে ব্যক্তিগত জীবনের নানাদিক তুলে ধরেন তিনি। বুঘধবার রাতে সেই মুহূর্তে, মুখোমুখি বসে থাকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন সিমি। লেখেন, 'ওরা বলছে তুমি চলে গিয়েছো... তোমাকে হারানোর এই যন্ত্রণা অসহনীয়। খুব কঠিন। বিদায় বন্ধু...'।



শিল্পপতি পরিচয়ে জীবন কাটালেও, সাধারণ মানুষের অভিভাবক হয়ে উঠেছিলেন রতন টাটা। দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর সম্মানও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে একেবারে মাটির কাছাকাছি অবস্থান ছিল তাঁর। যে কারণে লতায়পাতায় সম্পর্ক না হলেও, তাঁকে আপনজন হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন দেশের সাধারণ মানুষ। জীবনসঙ্গী না থাকলেও, সাধারণ মানুষই পরিবার হয়ে উঠেছিল তাঁর। 


কিন্তু একাকী জীবন কাটিয়ে দেওয়া নিয়ে কোথাও কি কোনও আক্ষেপ ছিল রতন টাটার মনে? সিমির টক শো-তেই সেই নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। কেন বিয়ে না করে জীবন কাটিয়ে দিলেন জানতে চাইলে বলেন, "পর পর বেশ কিছু ঘটনা যেমন দায়ী, তেমন সময়ও। সেই সময় কাজের মধ্যে ডুবে ছিলাম। সাতপাকে বাঁধা পড়ার উপক্রমও হয়েছিল বেশ কয়েক বার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি।"


জীবনে চার বার প্রেম এসেছিল বলেও জানান রতন টাটা। কখনও কখনও একাকীত্ব বোধ হয় বলেও জানান। তাঁর বক্তব্য ছিল, "স্ত্রী, পরিবার না থাকায় অনেক সময়ই একাকীত্ব বোধ হয়। নিজের পরিবার যদি হতো, খুব মন চায়। আবার কখনও কখনও কারও জন্য উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা না থাকার স্বাধীনতাও উপভোগ করি। তবে হ্যাঁ, বাকি সময় একটু একাকী মনে হয় নিজেকে।"


আর একটি সাক্ষাৎকারে রতন জানান, আমেরিকায় একটি সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। ওই একই সময় দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। সেই সময় ইন্দো-চিন যুদ্ধ চলছিল। তাঁর প্রেমিকার পরিবার মেয়েকে এতদূরে পাঠাতে চায়নি। একটা সময় পর সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। রতন টাটার সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নিয়ে মুখ খোলেন খোদ সিমিও। জানান, বেশ কিছুদিন সম্পর্কে ছিলেন তাঁরা। পরবর্তীতে রাস্তা আলাদা হয়ে গেলেও, বন্ধুত্ব ভাঙেনি। রতন টাটার মতো মানুষ হয়না বলেও জানান সিমি।