নয়াদিল্লি: নোটবন্দির পর বাজারে আনা হয়েছিল নতুন নোট। সেই ২০০০ টাকার নোটও তুলে নেওয়া হচ্ছে। মাত্র সাড়ে ছ'বছরের মাথায় কেন তুলে নিতে হল ২০০০ টাকার নোট, সেই নিয়ে মেলেনি স্পষ্ট ব্যাখ্যা (RS 2000 Currency)। তথ্য জানার অধিকারে তা জানতে চাওয়া হলে, কার্যতই 'উদ্ভট' জবাব এল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার তরফে (RTI to RBI)। বলা হয়েছে, ২০০০ টাকার নোট কেন তুলে নেওয়া হচ্ছে বাজার থেকে, তা জানানো সম্ভব নয়। এতে অন্য দেশগুলির সঙ্গে সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে।


সর্বভারতীয় স্তরে তৃণমূলের মুখপাত্র সাকেত গোখেল (Sakat Gokhale) তথ্য জানার অধিকারে এই আবেদন জানিয়েছিলেন। কেন ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়া হচ্ছে, জানতে চান তিনি। তাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে জবাব পাঠানো হলেও, আসলে জবাব কিছুই আসেনি।  এ নিয়ে কোনও তথ্য দেওয়া সম্ভব নয় বলেই উত্তর এসেছে। 


RBI-এর তরফে জানানো হয়, '২০০৫ সালের তথ্য জানার অধিকার আইনের ৮(১) অনুচ্ছেদের আওতায় এই তথ্য প্রকাশ করার থেকে অব্যাহতি নেওয়া হচ্ছে। কারণ এই সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করলে দেশের নিরাপত্তা, কৌশল, অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং অন্য দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে প্রভাব পড়বে'।



আরও পড়ুন: Elon Musk on Modi: মোদি-সাক্ষাৎ মাস্কের! প্রশংসায় ভরালেন মার্কিন ধনকুবের


RTI-এর আওতায় পাওয়া RBI-এর ওই জবাব ট্যুইটারে পোস্ট করেন সাকেত। তিনি লেখেন, 'উদ্ভট জবাব পাঠিয়েছে RBI. বলা হয়েছে, ২০০০ টাকা তুলে নেওয়ার কারণ খোলসা করলে নাকি ভারতের বিদেশ সম্পর্কে প্রভাব পড়বে! ২০০০ টাকার নোট কেবন তুলে নেওয়া হচ্ছে, জানতে RTI-এ আবেদন জানিয়েছিলাম। অদ্ভূত ভাবে, RBI জানিয়েছে, বিদেশ সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে বলে এই তথ্য প্রকাশ করবে না তারা'।


বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভারতের বিদেশ সম্পর্কের কী যোগ, সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন সাকেত। এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন তিনি। সাকেতের প্রশ্ন, 'এই ধূর্ত, অকস্মাৎ এবং রহস্যজনক নোটবন্দির নেপথ্যে কী কাজ করছে? অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন এবং RBI-কে জবাব দিতে হবে'।


২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে নোটবন্দি কার্যকর হয় ভারতে। তার কয়েক ঘণ্টা আগেই টেলিভিশন ভাষণে দেশবাসীর উদ্দেশে আচমকা সেই ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার পর বাজারে আসে ২০০০ টাকার নোট। ২০২৩ সালের ১৯ মে সেই ২০০০ টাকার নোটই ফের বাজার থেকে তুলে নেওয়ার ঘোষণা করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নোট জমা করাতে সময় দেওয়া হয়েছে।


২০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে স্পষ্ট ভাবে কিছু জানায়নি RBI. তবে জানানো হয়, 'ক্লিন নোট পলিসি'র আওতায় বেশি অঙ্কের ওই নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ভারতীয় অর্থনীতিতে ২০০০ টাকার নোটের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সাধারণ ক্ষেত্রে লেনদেনেও ব্যবহার চোখে পড়ছিল না তেমন।


গত ৮ জুন RBI গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানান, ২০০০ টাকা নোটে তাঁদের কাছে ১.৮ লক্ষ কোটি টাকা ফিরে এসেছে বাজার থেকে, যা বাজারে থাকা মোট সংখ্যক ২০০০ টাকার নোটের ৮০ শতাংশ।