নিউ দিল্লি : রেমডিসিভির নিয়ে ফের একবার সতর্কবার্তা। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রেমডিসিভির ব্যবহার না করার পরামর্শ দিলেন এইমসের ডিরেক্টর ডাঃ রণদীপ গুলেরিয়া। তিনি আরও জানিয়েছেন, ব্যক্তিগতভাবে কিনে কেউ এই ইঞ্জেকশন ব্যবহার করতে পারবে না, শুধুমাত্র হাসপাতালেই এই রেমডিসিভির ব্যবহার হবে।
এর আগেও এইমস এর ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া জানিয়েছিলেন, "রেমডিসিভির কোন ম্যাজিক বুলেট নয়। এই ওষুধের হঠাৎ করে কোনও ম্যাজিক হয়ে করোনায় মৃত্যুর হার কমে যাবে না। আমাদের হাতে এখনও ভাল কোনও অ্যান্টিভাইরাল নেই। তাই আমরা এটি ব্যবহার করতেই পারি। তবে ব্যবহারের সীমাবদ্ধতা আছে এবং সকলকে এই ব্যাপারে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে।"
বারবার বলা সত্ত্বেও ছবিটা বদলায়নি। রেমডিসিভির কিনে বেআইনি বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বহু বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে অক্সিজেন এবং রেমডিসিভিরের মতো কোভিড চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রীর ঘাটতির কথা উল্লেখ করে বম্বে হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করেন আইনজীবী স্নেহা মার্জাদি। সেই মামলার পর্যবেক্ষণে কেন্দ্রকে প্রশ্ন করে প্রধান বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি গিরিশ এস কুলকার্নির একটি বেঞ্চ।
জানতে চাওয়া হয়, "নির্দেশিকা অনুযায়ী, ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলি সমস্ত ওষুধ কেন্দ্রকে দেবে এবং কেন্দ্র রাজ্যগুলির কাছে তা সরবরাহ করবে। মহারাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি ভাল নয়। তবু এরকম অবস্থায় কীভাবে ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা থেকে রেমডিসিভিরের মতো ওষুধ সরাসরি কিনতে পারে বেসরকারি সংস্থাগুলি ?"
রেমডিসিভির নিয়ে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা দূর করতেই শুক্রবার আবারও সাবধান করেছেন চিকিৎসক গুলেরিয়া। বারবার জানিয়েছেন, অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই এই ইঞ্জেকশন দেওয়া হবে। পাশাপাশি সঙ্কটজনক রোগী ছাড়া সকলকে যে এই ইঞ্জেকশন দেওয়ার প্রয়োজন নেই তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি।
এর আগে রেমডিসিভির নিয়ে সতর্ক করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরও। গত ২৫ এপ্রিল নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র অত্যন্ত জরুরি পরিস্থিতিতেই এই ইঞ্জেকশন দিতে হবে। কোনও রোগীকে রেমডিসিভির দেওয়া হলে, তাঁকে কোন কোন পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে তারও নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। করোনা চিকিৎসায় রেমডিসিভিরের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার হচ্ছে বলেই এই নির্দেশিকা জারি করা হয়।
কোভিড আবহে রেমডিসিভিরের কালোবাজারিরও একাধিক ছবি সামনে এসেছে। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের মেরঠের একটি হাসপাতালে দুই ওয়ার্ড বয়ের বিরুদ্ধে ২৫ হাজার টাকায় রেমডিসিভির ইঞ্জেকশন বিক্রির অভিযোগ ওঠে। বলার অপেক্ষা রাখে না, রেমডিসিভির নিয়ে হুজুক এমন পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে যে, ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে। বাড়ছে আতঙ্কও। আর তাই আরও একবার সাধারণ মানুষকে করোনায় ব্যবহৃত রেমডিসিভির অ্যান্টিভাইরাল ইঞ্জেকশন নিয়ে সতর্ক করলেন এইমসের ডিরেক্টর ডাঃ গুলেরিয়া।