কলকাতা: জুনে ছিল ৪.৮৭ শতাংশ। সরকারি তথ্য় বলছে, জুলাইয়ে সেখান থেকে একধাক্কায় দেশে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির (Retail Inflation Of India) হার পৌঁছে গিয়েছে ৭.৪৪ শতাংশে। কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স (Consumer Price Index) বা উপভোক্তা মৃল্য সূচক (CPI), যার ভিত্তিতে মূল্যবৃদ্ধির হিসেব করা হয়, সেটিও এখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার (RBI Comfort Zone) নির্ধারিত স্বস্তিসীমার উপরে। সব মিলিয়ে উদ্বেগের কারণ, মনে করছে অর্থনৈতিক মহল।


আগে যা...
টানা চার মাস ধরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার নির্ধারিত স্বস্তি সীমার মধ্যেই ঘোরাফেরা করেছে এই হার। এমনকি, গত মে মাসে তা ৪.২৫ শতাংশে নেমে যায় যা কিনা দু'বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বনিম্ন। কিন্তু জুলাই থেকে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হারে অশনি সঙ্কেত টের পেতে থাকেন অর্থনীতিবিদরা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর নেপথ্য়ে বড় কারণ টোম্যাটোর মূল্যবৃদ্ধি। তবে একা টোম্যাটোকে দায়ী করলে চলবে না। বর্ষার ঘাটতি ও তার জেরে অন্যান্য সবজির ফলন যে ভাবে ধাক্কা খেয়েছিল, সেটিও এই খুচরো মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে কলকাঠি নেড়েছে। এর আগে, গত বছর এপ্রিল মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার পৌঁছে যায় ৭.৭৯ শতাংশে। 


জুন বনাম জুলাই...
স্রেফ খাদ্যপণ্যের নিরিখে মূল্যবৃদ্ধির হারের তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, জুনে যেখানে ওই সূচক ছিল ৪.৫৫ শতাংশ, সেখানে জুলাইতেই তা পৌঁছে যায় ১১.৫১ শতাংশে। গত বছর, এই মাসে ওই সূচক ছিল ৬.৬৯ শতাংশ। চোখ কপালে উঠছে? তা হলে আরও রয়েছে। ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকস অফিস যে পরিসংখ্যান দিয়েছে, তাতে ইয়ার-অন-ইয়ার অর্থাৎ গত বছরের নিরিখে এই বছর সবজির খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ৩৭.৪৩ শতাংশ। এদিকে সরকারের তরফে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ককে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার যেন ৪ শতাংশের কাছাকাছি থাকে (২ শতাংশ কম-বেশি হতে পারে)। তার পরও এমন ছবি কেন? 
অর্থনীতিবিদদের একাংশ অবশ্য মনে করেন, জুলাই মাসে যে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়বে সে কথা মোটামুটি আন্দাজ করেছিলেন তাঁরা। তা বলে একধাক্কায় এতটা বেড়ে যাবে, সেটা চিন্তায় ছিল না। কিছু দিন আগে, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া, চলতি অর্থবর্ষের জন্য মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল। খাদ্যপণ্যের দামের কথা মাথায় রেখে সেই পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, চলতি অর্থবর্ষে মূল্যবৃদ্ধির হার ৫.৪ শতাংশ থেকে ৫.১ শতাংশের মধ্যে থাকতে পারে। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে মূল্যবৃদ্ধি কোথায় গিয়ে ঠেকবে সে নিয়ে ফের হিসেবনিকেশ শুরু হলে তা অস্বাভাবিক হবে না। এও শোনা যাচ্ছে, আগামী কয়েক মাসের মধ্যে গম আমদানি করতে পারে নরেন্দ্র মোদির সরকার।
চিন্তার মেঘ তাই কাটছে না। 


আরও পড়ুন:এবার ক্রিকেটেও লাল কার্ড! অভিনব নিয়ম চালু করছে সিপিএল কৃর্তপক্ষ