নয়াদিল্লি: হিন্দুরা না থাকলে পৃথিবী টিকবে না বলে এবার দাবি করলেন বিজেপি-র অভিভাবক সংস্থা, রাষ্ট্রীয় স্বয়ম সেব সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভাগবত। তাঁর দাবি, পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখার মূল কেন্দ্রবিন্দুই ছিল হিন্দু সমাজ। হিন্দুদের ছাড়া অস্তিত্বই থাকবে না পৃথিবীর। হিন্দু সমাজ অমর, গ্রিসের ‘ইউনান’, মিশরের ‘মিস্র’ এবং রোম সাম্রাজ্যকেও হিন্দু সমাজ ছাপিয়ে দিয়েছে বলে জোর দেন ভাগবত। (Mohan Bhagwat)
সংঘর্ষ, অশান্তির পরিবেশ কেটে গিয়ে, সবে শান্তি ফিরতে শুরু করেছে মণিপুরে। সেই মণিপুরে পা রেখেই এমন দাবি করলেন ভাগবত। তাঁর দাবি, গোটা পৃথিবীতে হিন্দুি সমাজই ধর্মের রক্ষাকর্তা। ভাগবত বলেন, “ভারত একটি অমর সভ্যতার নাম…সমাজে এমন নেটওয়র্ক তৈরি করেছি আমরা যে হিন্দু সম্প্রদায় চিরকাল বিরাজ করবে। হিন্দুদের অস্তিত্ব মুছে গেলে পৃথিবীর অস্তিত্বও থাকবে না।” (RSS News)
'মহাভারতে'র প্রসঙ্গ টেনে ভাগবত বলেন, "ভারতবর্ষ বরাবরই ছিল। মহাভারত, রামায়ন, কালীদাসের মহান সাহিত্যে ভারতবর্ষের উল্লেখ রয়েছে। মণিপুর থেকে আফগানিস্তান পর্যন্ত ভারতবর্ষ ধরা হতো। রাজা বদলেছে, রাজত্ব বদলেছে, মানুষ বদলেছে...একসময় অনেক রাজা ছিলেন, আবার কখনও একজন মহান শাসক ছিলেন, আমরা স্বাধীন ছিলাম একসময়, আবার একসময় হামলার শিকার হই। কিন্তু ভারত মাথা তুলে দাঁড়িয়ে থেকেছে, ঐক্যবদ্ধ দেশ হিসেবে থেকেছে। ১৯৪৫ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বিশ্ব রাজনীতির রূপরেখা বদলে যায়। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা জেরে নেতারা ভিন্নমত প্রকাশ করতে শুরু করেন। কিন্তু তাঁদের সকলের মূল ধারণা একই ছিল যে, ভারত আমাদের।"
অতি সম্প্রতিই ভাগবত দাবি করেন, ভারতে অহিন্দু কেউ নেই। মুসলিম-খ্রিস্টান, সকলের পূর্বপুরুষই এক। মণিপুরে গিয়ে হিন্দু সমাজকে নিয়ে আরও জোর দিয়ে কথা বলতে শোনা গেল তাঁকে। পাশাপাশি, ভারতের অর্থনীতি নিয়েও কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ভারতকে সম্পূর্ণ ভাবে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে হবে। দেশগঠনের ক্ষেত্রে সামরিক দক্ষতা ও জ্ঞানও সমান জরুরি বলে মত তাঁর। তিনি বলেন, “দেশগঠনের ক্ষেত্রে শক্তি প্রয়োজন। শক্তির অর্থ অর্থনৈতিক ক্ষমতা। শ্রেষ্ঠত্ব শব্দটির ভুল অর্থ বের করা হয় অনেক সময়। আমাদের অর্থনীতিকে আত্মনির্ভর করে তুলতে হবে। কারও উপর নির্ভরশীল হলে চলবে না।”
বাণিজ্যশুল্ক নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে টানাপোড়েনের জেরে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকার ‘স্বদেশিয়ানা’য় জোর দিচ্ছে। ভাগবতও বার বার তার উপরই জোর দিয়ে আসছেন সেই থেকে। নকশালবাদ নিয়েও নিজের মতামত তুলে ধরেন ভাগবত। তাঁর মতে, সমাজ আর সহ্য না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার জন্যই নকাশপন্থার সমাপ্তি ঘটেছে।