নয়াদিল্লি: শাসকদল আম আদমি পার্টি ও বিরোধী দল বিজেপি কাউন্সিলরদের মধ্যে হাতাহাতির জেরে ভণ্ডুল হল দিল্লি পুরসভার অধিবেশন। গতকাল পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্য নির্বাচন ঘিরে অশান্তির সূত্রপাত। ওয়েলে নেমে একে অন্যের দিকে ব্যালট বক্স ছোড়েন আপ ও বিজেপি কাউন্সিলররা। ধাক্কাধাক্কির মধ্যে কেউ কেউ ঘুসি বাগিয়ে তেড়ে যান। আম আদমি পার্টির নব নির্বাচিত মেয়র শেলি ওবেরয়ের অভিযোগ, ভোট চলাকালীন বিজেপি কাউন্সিলররা তাঁকে আক্রমণের চেষ্টা করেন। অশান্তির জেরে আজও দিল্লি পুরসভার অধিবেশন স্থগিত হয়েছে।
বারবার মুলতুবি প্রস্তাব, উচ্চগ্রামে স্লোগান থেকে হাতাহাতি- দিল্লি পুরসভার অন্দরে বাদ গেল না কিছুই। পুরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটিতে কারা কারা জায়গা পাবেন তা নিয়েই বিজেপি ও আম আদমি পার্টির মধ্যে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে। পুর অধিবেশনে বারবার বাধা পড়ায় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত মুলতুবি করে দেওয়া হয় দিল্লি পুরসভার অধিবেশন। সদস্য নির্বাচনের কাজও হয়নি।
এর আগেও দিল্লি পুরসভায় আপ ও বিজেপি কাউন্সিলরদের মধ্যে বচসা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দিল্লি পুরসভার অধিবেশন ঠিকমতোই এগোচ্ছিল। সেখানে দিল্লি পুরসভায় নতুন মেয়র নির্বাচন করা হয়। আপের শেলি ওবেরয় মেয়র পদে বসেন। তিনি নির্বাচনে হারিয়েছেন বিজেপির প্রার্থীকে। আপের আলে মহম্মদ ইকবাল ডেপুটি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন।
তারপর স্ট্যান্ডিং কমিটি নির্বাচন শুরু হতেই তুমুল হট্টগোল শুরু হয়। বচসা শুরু হয়। একে অপরের দিকে বোতল ছুড়ে মারেন আপ ও বিজেপি কাউন্সিলররা। ছোড়া হয় ফল, ব্যালট বক্স। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত ভাইরাল হয়েছে। নতুন মেয়র অভিযোগ করেন, আগের দিন বিজেপির কিছু সদস্য তাঁর উপর হামলা চালিয়েছে। সেই অভিযোগ সঙ্গে সঙ্গে খারিজ করে বিজেপি। গোটা ঘটনায় বিজেপির দিকে আঙুল তুলে ট্যুইট করেন আপের মেয়র শেলি ওবেরয়। পাল্টা বিজেপি অভিযোগ করে, গোপন ভোটদানের সময় আপের কিছু কাউন্সিলর তাঁদের ব্যালটের ছবি তুলছিলেন। তার বিরোধিতা করেন তাঁরা। এই কারণেই নির্বাচন বন্ধ করে নতুন করে নির্বাচন করার দাবি জানানো হয়। কিন্তু তা খারিজ করে দেওয়া হয়। তারপরেই দুই দলের মধ্যে তুমুল বচসা শুরু হয়।
স্ট্যান্ডিং কমিটি কেন গুরুত্বপূর্ণ:
পুরসভার মাথায় থাকেন মেয়র। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটির হাতেই থাকে executive powers অর্থাৎ কোনও প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করা, সেই সংক্রান্ত আলোচনা করা এবং কোনও প্রকল্পে সিলমোহর দেওয়ার ক্ষমতা থাকে এই কমিটির হাতেই। বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য সাব কমিটি তৈরির ক্ষমতাও রয়েছে এই কমিটির হাতেই। স্ট্যান্ডিং কমিটিতে মোট ১৮ জন সদস্য থাকেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন পুর অধিবেশনে নির্বাচিত হন। বাকি ১২ জন পরে ওয়ার্ড কমিটির মাধ্য়মে নির্বাচিত হন।
আরও পড়ুন: খুঁজে পাচ্ছেন না মূল্যবোধ, কংগ্রেস ছাড়লেন স্বাধীনতা সংগ্রামী রাজাগোপালাচারীর প্রপৌত্র