কলকাতা: মধ্যপ্রদেশের গড়কুণ্ডার ফোর্টে শ্যুটিং চলছে 'ব্যোমকেশ ও দুর্গরহস্য' (Byomkesh O Durgo Rohosshyo) ছবির। অন্তঃসত্ত্বা সত্যবতীর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সাড়ে চার কেজির কৃত্রিম গর্ভ নিয়ে প্রথম কয়েক ঘণ্টা শ্যুটিং করেই তিনি টের পেলেন, কাজটা মোটেই সহজ নয়। শুরু হল বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা। এবিপি লাইভকে সেই গল্প শোনালেন 'ব্যোমকেশের সত্য' ওরফে রুক্মিণী মৈত্র (Rukmini Maitra)। 


সত্যবতীর চরিত্রে যখন প্রথমে তাঁর কাছে আসে, নাকচ করে দিয়েছিলে রুক্মিণী। রাজি হন আরও দেড় মাস পরে। অভিনেত্রী বলছেন, 'আমি সবসময়, প্রত্যেকটা চরিত্রের মধ্যে নতুন কিছু খুঁজি। চমক না থাকলে, কাজ করে মজা পাই না। যখন এই চরিত্রের অফার আসে, আমি বিরসাকে বলেছিলাম, আর কি নতুন আছে? এর আগে সোহিনী (সরকার), ঋদ্ধিমা (ঘোষ) সবাই তো সত্যবতীকে দুর্দান্তভাবে ফুটিয়ে তুলেছে। তখন বিরসা আমায় জানিয়েছিল, এই গল্পে রুক্মিণী সাড়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। শুনেই আমার দারুণ লেগেছিল। মূলধারার ছবির নায়িকারা সাধারণ যে রাস্তায় হাঁটতে চান না, আমি তেমন চরিত্র বেছে নিতে ভালবাসি। প্রথম যখন রুপোলি পর্দায় এসেছিলাম, সবাই ভেবেছিলেন রুক্মিণী মানেই মূলধারার ছবির নায়িকা। শুধু সেজেগুজে থাকে। অথচ আমি আমার প্রথম ছবি করেছিলাম মেক আপ ছাড়া! কোথাও সন্ত্রাসবাদী, কোথাও দুই বাচ্চার মা.. আমি এমন চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। সত্যবতী সাড়ে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা, এটাই বোধহয় এই চরিত্রকে আমার হ্যাঁ বলার অন্যতম কারণ ছিল।'


এ তো গেল সত্যবতীর চরিত্রে রাজি হওয়ার গল্প। কিন্তু তার পরের সফরটা? রুক্মিণী বলছেন, 'প্রথম প্রথম তো ভীষণ উৎসাহী আমি.. প্রস্থেটিক পেট নিয়ে শ্যুটিং করব। নতুন চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ঘন্টা ২ শ্যুটিং করার পরেই বুঝতে পারলাম, শুধু ওই সাড়ে ৪ কেজির কৃত্রিম গর্ভ বহন করা নয়, একজন সন্তানসম্ভবা নারীর যা যা শারীরিক সমস্যা হয়, সবই আমার হবে। কয়েকদিন শ্যুটিং করার পরেই, আমার পা ফুলতে শুরু করল। আমি সেটে কখনও শুই না, কিন্তু দেখলাম মেকআপ করে আর বসতে পারছি না। বার বার শুয়ে পড়তে হচ্ছে, হাঁটু কাঁপছে, কোমরে অসহ্য় ব্যথা। শুধু তাই নয়, সত্যবতীর চরিত্রের জন্য আমায় ওজন বাড়াতে বলা হয়েছিল। শ্যুটিং শুরু হওয়ার পরে বুঝতে পারলাম, কৃত্রিম গর্ভ থাকায় আমার খাওয়া-দাওয়ার স্বাভাবিকত্ব পর্যন্ত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার ওপর ওই সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে দূর্গের সিঁড়ি ভেঙে ওঠা, সারাদিন শ্যুটিং করা। একদিন পরেই বুঝতে পেরেছিলাম, মোটেই সহজ নয়।'


শ্যুটিং শেষ, এবার ফলের অপেক্ষা কেবল। রুক্মিণী বলছেন, 'আমি আমার সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করেছি। তবে বৃক্ষের পরিচয় তার ফলে। আমার তরফ থেকে যা যা করার আমি করে ফেলেছি। এবার দর্শকরা বিচার করবেন।'


আরও দেখুন: Rukmini Exclusive: সন্তানসম্ভবা সাজতে সাড়ে ৪ কেজির কৃত্রিম গর্ভ,তা নিয়েই ৩০০ সিঁড়ি ভাঙতেন রুক্মিণী!