Russia-Ukraine Crisis: ফের ভয়াবহ পরিস্থিতি হতে পারে চেরনোবিল পরমাণু কেন্দ্রে। বিদ্যুৎ সরবারহের জেরে বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। বৃহস্পতিবারই এই নিয়ে সতর্ক করেছে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্সিয়াল অফিস। 


এদিন ইউক্রেইনস্কা প্রাভদা সংবাদপত্রে চেরনোবিলের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক। সংবাদপত্রে তিনি জানিয়েছেন, পরিত্যক্ত ওই প্ল্যান্টের কিছু উপাদান ধারাবাহিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ পাচ্ছে। যা আগে ইলেকট্রিক সাপ্লাই থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। ওই প্লান্টে অনবরত বিদ্যুৎ সরবরাহ হতে থাকলে সমগ্র ইউরোপ ছাড়াও রাশিয়ার জন্য ভয়ঙ্কর বিপদ হতে পারে।  


এই বলেই অবশ্য থেমে থাকেননি পোডোলিয়াক। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) বর্তমানে চেরনোবিলের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। তাই চেরনোবিল পাওয়ার প্ল্যান্টে এখন কী হচ্ছে, তা কেউ বুঝতে পারছে না। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের পরামর্শদাতার অভিযোগ,  রাশিয়া তার প্রতিবেশীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউক্রেনের পারমাণবিক কেন্দ্রকে নিশানা করেছে। 


পরমাণু বিকিরণের ইতিহাস বলছে, পৃথিবীর ভয়ঙ্করতম পারমাণবিক বিপর্যয়ের কেন্দ্রস্থল চেরনোবিল। ১৯৮৬ সালের এপ্রিলে সেখানকার চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যে সেখান থেকে পারমাণবিক তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে, যা গ্রাস করে ফেলে দেড় লক্ষ বর্গ কিলোমিটারের বেশি অঞ্চলে। হিরোশিমা-নাগাসাকির তুলনায় চেরনোবিল থেকে ৫০০ গুণ বেশি তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায় বলে জানা যায়।  রাশিয়া, ইউক্রেন, বেলারুশ এমনকী চিন ও আমেরিকাতেও তার প্রভাব টের পাওয়া গিয়েছিল।


ওই দুর্ঘটনার প্রভাবে উত্তর ইউরোপের বায়ুমণ্ডলে তেজষ্ক্রিয় বিকিরণের মাত্রা অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যায়। সুইডেনের পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, নিজেদের দেশেই কিছু ঘটেছে বলে প্রথমে ধারণা জন্মায় তাদের।  তাই তড়িঘড়ি সুইডেনের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে জানা যায় চেরনোবিলে বিপর্যয় ঘটেছে। 


তবে আজও চেরনোবিলের ধ্বংসস্তূপ পুরোপুরি পরিষ্কার করা যায়নি। এখনও সেখানে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ রয়েছে বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। সব কিছু পরিষ্কার করে ২০৬৫ সালের আগে সম্পূর্ণ ভাবে সেটিকে নিরাপদ ঘোষণা করা সম্ভব নয় বলে দাবি তাঁদের।