নয়াদিল্লি: তালিবানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তৈরিতে জোর দিচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Putin On Relation With Taliban)। বুধবার, তালিবানের একদল প্রতিনিধি মস্কো-সফরে এলে এই বার্তা দেন পুতিন। তাঁর মতে, 'আমার মতে, সব সময় বাস্তবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা উচিত। আফগানিস্তানের ক্ষমতা এখন তালিবানের হাতে...তালিবান সরকারের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক তৈরি করা দরকার।'


বিশদ...
মস্কো যে আফগানিস্তানের তালিবান-সরকারের বিষয়ে অবস্থান নরম করতে পারে সেই ইঙ্গিত তাদের বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের কথা আগেই মিলেছিল। লাভরভ জানিয়েছিলেন, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তালিকা থেকে তালিবানকে সরানোর পরিকল্পনা করছে তারা। প্রসঙ্গত, ২০০৩ সাল থেকে তালিবানকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তালিকাভুক্ত করে রেখেছিল রাশিয়া। বছরতিনেক আগে, আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরতেই সে দেশের ক্ষমতা দখল করে তালিবান। তার পর থেকে কার্যত বাকি বিশ্বের মতো রাশিয়াও সন্দেহের চোখে দেখেছে তালিবানকে। তা হলে হঠাৎ সম্পর্ক তৈরির ভাবনা কেন? এই প্রসঙ্গে, আমেরিকার বছরছয়েক পুরনো একটি দাবির কথা মনে পড়ে গিয়েছে সংবাদমাধ্য়মের। ২০১৮ সালে আমেরিকা দাবি করেছিল, মস্কোই গোপনে তালিবানকে অস্ত্রশস্ত্র জোগান দিচ্ছে। যদিও সে সময়ে রাশিয়া সেই অভিযোগ অস্বীকার করে। তবে তালিবানের সঙ্গে যে রাশিয়ার একটা দীর্ঘ সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে, সে কথা এখন আর অজানা নয়।


কেন সম্পর্ক তৈরির সিদ্ধান্ত?
আন্তর্জাতিক মহলের ব্যাখ্যা, ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের ফলে রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পশ্চিমের দেশগুলি। অন্য দিকে, আফগানিস্তানের তালিবানি শাসনও স্বীকৃতি পায়নি বিশ্বমঞ্চে। এমন অবস্থায় দু-দেশের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হলে লাভ দু-পক্ষেরই, মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা। আফগানিস্তানের তাদের শাসন যাতে দ্রুত আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায়, সেটা নিশ্চিত করতে চাইছে তালিবান। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হলে সেই লক্ষ্যে একটা বড় পা ফেলা যাবে। তা ছাড়া, তাদের আন্তর্জাতিক যে সব সম্পত্তি 'ফ্রিজ' করা আছে, সেগুলি ছাড়ানো, ব্যবসায়িক লেনদেন, 'লাপিজ-লাজুলি ট্রেড করিডোর'-র মতো একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ফের শুরু করতে পারবে তালিবান। অন্য দিকে, আফগানিস্তানের স্থিতাবস্থা ফেরাতে আরও বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে রাশিয়া। এটি পুতিনের কাছে অত্যন্ত জরুরি। বিশেষত, এই লক্ষ্যে মস্কোর সাফল্য ওয়াশিংটনকে আরও কিছুটা ব্যাকফুটে ঠেলে দেবে। তা ছাড়া, মাদক পাচার, চরমপন্থী ইসলামি হামলার মতো ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতেও এই সম্পর্ক তৈরির বিষয়টি মস্কোর জন্য জরুরি বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে সম্পর্ক তৈরি মানেই তালিবান সরকারকে স্বীকৃতি নয়। সেই কাজ কি আদৌ করবে মস্কো? জোর জল্পনা শুরু হয়েছে এর মধ্যে।


আরও পড়ুন:"অধিকৃত কাশ্মীর আমাদের নয়", ইসলামাবাদ হাইকোর্টে স্বীকারোক্তি পাকিস্তান সরকারের