তিরুপতি: মেয়ে আটকে পড়েন তিরুপতিতে। মা বৃন্দাবনে। অবশেষে দেখা হল বৃহস্পতিবার। যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিল তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম কর্তৃপক্ষ।


৩২ বছরের এস্থার ও তাঁর মা অলিভিয়া ভারতে পা রাখেন ৬ ফেব্রুয়ারি। ইচ্ছে ধিল, দেশের সব ইস্কন মন্দির ঘুরে ঘুরে দেখবেন। ভারতেই বরাবরের জন্য থেকে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল, পেশা হিসেবে বেছে নিতেন ফিজিওথেরাপি। কিন্তু করোনা লকডাউন আচমকা তাঁদের অচল করে দেয়। কর্মহীন, হাতে কোনও টাকা না থাকা মা-মেয়ে লকডাউন একটু শিথিল হলে ১৭ জুন পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসে পৌঁছন তিরুপতি। তাঁদের তিরুমালা মন্দিরে গিয়ে ভগবান তিরুপতি দর্শনের ইচ্ছে ছিল কিন্তু তিরুমালা তিরুপতি দেবস্থানম বা টিটিডি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, করোনার জেরে কোনও বিদেশিকে তারা দর্শন নিতে দিচ্ছে না।

গত মাসে ৭০ বছরের অলিভিয়া মেয়েকে তিরুপতিতেই থাকতে বলে নিজে বৃন্দাবন চলে যান। রাশিয়ার মানুষ বৃন্দাবনে বেশি আসেন, তাই তাঁর ভরসা ছিল, সেখানে কিছু সাহায্য পাবেন। কিন্তু করোনার জেরে তেমন কারও সঙ্গে দেখা হয়নি, উল্টে লকডাউনে আটকে পড়েন। এদিকে মায়ের থেকে বিচ্ছিন্ন, হাতে কার্যত একটা পয়সা না থাকা এস্থার তিরুপতিতে অত্যন্ত সঙ্কটে পড়েন। ভাষাগত সমস্যায় নিজের কথা কাউকে বলতেও পারছিলেন না। এক গেস্ট হাউসের মালিক তাঁকে আশ্রয় দেন।

মা-মেয়ের কথা জানাজানি হতে এগিয়ে আসে টিটিডি কর্তৃপক্ষ। সাহায্য করে আর কয়েকটি সংগঠনও। বিমান পরিষেবা বন্ধ থাকায় অলিভিয়া যাতে গাড়ি করে বৃন্দাবন থেকে দিল্লি আসতে পারেন, সেই ব্যবস্থা হয়। সেখান থেকে কাটা হয় তাঁর তিরুপতি যাওয়ার বিমান টিকিট। বৃহস্পতিবার সকালে এস্থার শ্রী ভেঙ্কটেশ্বরের দর্শন সারেন। তারপর তিরুপতি বিমানবন্দরে দেখা হয় মায়ের সঙ্গে।

টিটিডি চেয়ারম্যান ওয়াইভি সুব্বা রেড্ডি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, মায়ের সঙ্গে আর একবার তাঁর শ্রী ভেঙ্কটেশ্বরের দর্শন করার ব্যবস্থা করে দেবেন তিনি। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে টিটিডি কর্তৃপক্ষ, বলা হয়েছে, রুশ দূতাবাসের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের দেশে ফেরার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

টিটিডি চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ দিয়েছেন এস্থার, জানিয়েছেন, এখন তিনি নিশ্চিন্ত। আমি ভারতীয়দের ভালবাসি, তাঁর মা বলেছেন।