পশ্চিম মেদিনীপুর: চারদিকে ঘন জঙ্গল। তার মাঝেই মাটি খুঁড়তেই, একের পর এক উঠে এল আগ্নেয়াস্ত্র। মিলল টিনের কৌটো, বিদ্যুতের তার। দীর্ঘ কয়েক বছর পর আবারও অস্ত্র উদ্ধার জঙ্গলমহলে।


আগ্নেয়াস্ত্র মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে। সম্প্রতি ঝাড়গ্রামের জঙ্গলমহলে মাওবাদীদের আনাগোনার অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা শোরগোল ফেলে দিয়েছে।


গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার উখলা গ্রাম লাগোয়া জঙ্গলে, জেসিবি নিয়ে যায় গোয়ালতোড় থানার পুলিশ। মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে আসে একের পর এক বন্দুক। অন্তত ৩০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি।


হিংসা নেই। দীর্ঘদিন রক্তপাতেরও খবর মেলেনি জঙ্গলমহলে। কিন্তু বারুদের গন্ধহীন সেই জঙ্গলেই হঠাৎ অস্ত্রের খোঁজ মেলায় আতঙ্কে গ্রামবাসীরা। এক স্থানীয় বাসিন্দার মতে, একসময় মাওবাদীরা যাতায়াত করত, তারাই হয়ত রেখেছে বলে দাবি তাঁদের। আরেকজন স্বীকার করলেন, তাঁরা ভয়ে রয়েছেন।


কারা লুকিয়ে রেখেছিল এই সমস্ত অস্ত্র? খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু জঙ্গলমহলে অস্ত্র উদ্ধার হতেই, শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায়ের দাবি, সিপিএমের লুকিয়ে রাখার সম্ভাবনা বেশি।


সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী আবার বলেন, সাহস থাকলে তৃণমূল মিছিল ডাকুক, নবান্ন ঘেরাও করুক। ১০ বছরে কেন কিছু করতে পারেনি, যিনি মাটির তলায় রাখতেন, তাঁরা তো তৃণমূলে। পুলিশ কী করছে।


বছর ঘুরলেই বিধানসভা ভোট। বাংলা দখলে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। তাই অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায়, সিপিএমের সঙ্গে সঙ্গে তৃণমূলের দিকেও আঙুল তুলছে গেরুয়া শিবির।


দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, আগে কঙ্কাল মিলেছিল। এখন অস্ত্র পাওয়া যাচ্ছে। ওই জায়গা তো মুক্তাঞ্চল ছিল, মাওবাদী ও হার্মাদও হতে পারে। সিপিএমের সম্ভাবনা থাকলেও, এ সরকারের আমলে নয়, তা বলা যায় না। তদন্ত হওয়া উচিত।


সব মিলিয়ে বিধানসভা ভোটের আগে আগে ফের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে জঙ্গলমহল।