অলোক সাঁতরা, পশ্চিম মেদিনীপুর : দীর্ঘ পাঁচ মাস ধরে মলাশয়ে কলম আটকে ছিল। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে ভুবনেশ্বরের AIIMS-এ গিয়েও মেলেনি সুরাহা। অবশেষে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে নিখরচায় মেদিনীপুর শহর সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কলম বের করে সবংয়ের কিশোর তথা নবম শ্রেণির ছাত্র সুদীপ মঠের নতুন জীবন দান করলেন চিকিৎসকরা।


গত ২৯ জানুয়ারি বাড়ির লোকেরা প্রথমে দেখতে পান, সুদীপের মলদ্বার দিয়ে রক্ত পড়ছে । জিজ্ঞাসা করলেও বিশেষ কিছু বলতে পারেনি সুদীপ। সুদীপের বাবা-মা তাকে প্রথমে সবং গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে রেফার করা হয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁরা তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখান থেকে তাঁরা আবার নিয়ে যান ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে। বহু পরীক্ষা নিরীক্ষার পরেও সুদীপের কষ্ট মুক্ত হয়নি।


এদিকে ততদিনে সুদীপের বাবা তথা পেশায় খেলনা বিক্রেতা মুকুন্দ মঠের প্রায় দুই লক্ষ টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। অবশেষে প্রায় ৫ মাস যন্ত্রণা সহ্য করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ভরসায় ভর্তি করা হয় মেদিনীপুর শহরের উপকণ্ঠে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই ডাক্তার আশিস মণ্ডল বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলেন, সুদীপের মলাশয়ে আটকে রয়েছে একটি কলম। অপারেশন করে সেটি বের করতে হবে। অবশেষে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে বিনা পয়সায় সুদীপের এই জটিল অপারেশনে সফলভাবে করে কলমটি বের করা হয়।


অপারেশনে ডাক্তার আশিস মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন সুনন্দিতা বেরা এবং অ্যানাস্থেটিস্ট দীপক দাস। তবে মলাশয় ও মলদ্বারে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়ায় সেই চিকিৎসাই করা হচ্ছে এখন। তবে সুদীপ অনেকটাই স্থিতিশীল বলে জানালেন ডাক্তাররা।


পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লকের কাপাসদা গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ। বাবা মুকুন্দ মঠ ও মা শেফালী মঠ ছেলেকে নুতুন জীবনদান দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডাক্তারদের। প্রশ্ন উঠছে, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ থেকে ভুবনেশ্বরের এইমস কেন ধরতে পারল না যে সুদীপের মলদ্বারে কলম আটকে রয়েছে। ঠিকমতো চিকিৎসা হলে দীর্ঘ ৫ মাস ধরে এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হত না সুদীপকে।