নয়াদিল্লি:  সমলিঙ্গে বিবাহ (Same Sex Marriage) নিয়ে বড় ঘোষণা সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court)। ব্যক্তি হিসেবে কারও বিবাহের অধিকারে নিষিদ্ধি করা যায় না বলে জানিয়ে দিল দেশের শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, যৌন অভিচারের নিরিখে কাউকে বিবাহের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। সমকামী যুগলদের রেশন কার্ড, পেনশন, গ্র্যাচুইটি এবং উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কমিটি গড়ে কেন্দ্রকে পরবর্তী পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। 


সমকামী সম্পর্ক অপরাধমুক্ত হলেও, ভারতে সমকামী যুগলদের বিবাহ এখনও নিষিদ্ধই। সেই নিয়ে মঙ্গলবার শুনানি চলছিল। তাতে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় এবং পাঁচ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি এসকে কউল, বিচারপতি এসআর ভাট, বিচারপতি পিএস নরসিংহ পৃথক রায় দিয়েছেন, চারটি পৃথক রায় দিয়েছেন। বিচারপতি হিমা কোহলিও ওই বেঞ্চে ছিলেন। 


এর পর কেন্দ্র এবং সংসদের উপর বিষয়টি ছেড়ে দেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতার জন্য বিশেষ বিবাহ আইনের বিধি বাতিল করার অধিকার নেই আদালতের, সেগুলির বদলে দেওয়ার অধিকারও নেই। তবে ওই আইনকে লিঙ্গ বৈষম্য মুক্ত করতে আবেদন জমা পড়েছিল আদালতে। সেটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ আইন, ভিন্ ধর্মের বিবাহ, ভিন্ ধর্মবিশ্বাসের বিবাহও স্বীকৃত তাতে।  সমলিঙ্গের বিবাহকে তার অন্তর্ভুক্ত করতে আবেদন জমা পড়ে।


এদিন প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, "জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারও কারও ক্ষেত্রে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সংবিধানে উল্লেখিত ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের অন্তর্গত জীবন এবং স্বাধীনতার অধিকারের মধ্যে পড়ে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার।"


আরও পড়ুন: TCS Recruitment: চলতি অর্থবর্ষে ৪০ হাজার ফ্রেশার নিয়োগ করবে টিসিএস, সুখবর দিলেন সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার


প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, "বিবাহের অধিকারের মধ্যে জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার এবং সেই বিবাহের স্বীকৃতি আদায়ের অধিকারও পড়ে। এই ধরনের সম্পর্ককে স্বীকৃতি না দিলে, সমকামী যুগলদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়। কিন্তু যৌন অভিচারের জন্য কারও বিবাহের অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।"


এর আগে কেন্দ্রের তরফে আদালতে জানানো হয়, শহুরে এবং অভিজাতদের মধ্যেই সমকামিতার গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। এর পাল্টা আদালতের বক্তব্য ছিল, সমকামিতা কোনও শহুরে প্রবণতা নয়। শুধুমাত্র সমাজের উচ্চস্তরে এবং অভিজাতদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই সমকামিতা। 


এর আগে, গত ৩ মে আদালতে হলফনামা জমা দেয় কেন্দ্র। তাতে বলা হয়, মন্ত্রিসভার সচিবকে মাথায় রেখে বিশেষ কমিটি গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের, যাতে সমকামী যুগলদের যাবতীয় সমস্য়ার সমাধান করা যায় এবং বিবাহের সমানাধিকারের বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখা যায়। সেই মতোই কেন্দ্রকে পদক্ষেপ করতে বলেছেন প্রধান বিচারপতি।