নয়াদিল্লি: ঝাড়খন্ড বিধানসভা নির্বাচনে খারাপ ফলের জন্য বিজেপিকে কটাক্ষ শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউতের। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও বিজেপি হিন্দি বলয়ে হারল বলে মন্তব্য করলেন তিনি। এদিন সকালে প্রতিবেশী রাজ্যে ভোটগণনার শুরু থেকেই স্পষ্ট ট্রেন্ড ছিল যে, বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে, এগিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস-জেএমএম জোট। শিবসেনা শীর্ষ নেতাটি আরও বলেছেন, বিজেপির হাতছাড়া হল ঝাড়খন্ড। মহারাষ্ট্রের পর আরও একটা রাজ্য হারাল বিজেপি। যেভাবে নতুন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) চালু করা হল, তাতে বিজেপির লাভ হয়নি।
গতকাল দিল্লির রামলীলা ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাষণে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিভ্রান্তি কাটাতে সাহায্য করলেও সংসদেই এব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা আসা উচিত ছিল বলে অভিমত জানিয়েছেন রাউত।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রে শিবসেনা বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে, কংগ্রেস-এনসিপির জোটে ঢুকে সরকার গড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ইদানীং বিজেপিকে নিশানা করে চলেছেন তিনি। সোমবার নাগরিকত্ব(সংশোধনী) আইনের বিরুদ্ধে প্রয়াত মার্কিন নেতা মার্টিন লুথার কিংকে উদ্ধৃত করে বিজেপিকে প্রচ্ছন্ন আক্রমণ করেন রাউত। প্রবাদপ্রতিম নাগরিক আন্দোলনের নেতাকে স্মরণ করে রাউত বলেন, রাজনীতি ধর্মীয় বিরোধ, বিবাদ সৃষ্টি করলে স্পষ্ট বুঝে নিতে হবে যে, দেশ ভুল লোকজনের হাতে চলছে।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংসদের দুই কক্ষে গৃহীত হওয়ার পর দেশব্যাপী প্রতিবাদের মধ্যেই কংগ্রেস সহ বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্রের সরকার দেশে ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন ঘটাচ্ছে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, ২০১৪-র ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় অত্যাচার এড়াতে পালিয়ে আসা অ-মুসলিম ৬টি ধর্মের লোকজনকে শরণার্থীর মর্যাদা ও ভারতের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে।
পাশাপাশি দলীয় মুখপত্র সামনা-র সম্পাদকীয়তেও শিবসেনা চরম সঙ্কটে পড়া কৃষকদের সমস্যাগুলি তোলার বদলে বিজেপি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের মতো ধর্মীয় আবেগে মোড়া ইস্যু খুঁচিয়ে তুলছে বলে অভিযোগ করেছে। শিবসেনা সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের মহারাষ্ট্রের কৃষকদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কৃষিঋণ মকুবের সাম্প্রতিক ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, কৃষকদের সমস্যা লাঘব করতে এটাই উদ্ধব ঠাকরের প্রথম পদক্ষেপ। এতে ৯০ শতাংশের বেশি চাষির লাভ হবে। গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকরী তাঁর ভাষণে হিন্দু হওয়া অপরাধ কিনা বলে যে মন্তব্য করেছেন, সে ব্যাপারে রাউত বলেন, কৃষকদের বেশিরভাগই হিন্দু, ধর্মীয় আবেগের ইস্যু তুলে তাঁদের সমস্যা দূর করা যাবে না।