মক্কা-মদিনা তীর্থে গিয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছেন ৪২ জন ভারতীয়। এঁদের মধ্যে ১৮ জন হায়দরাবাদের একটি পরিবারের সদস্য। পুণ্যলাভের আশায় ভিনদেশে মক্কা-মদিনা তীর্থে গিয়ে শেষ হয়ে গেল প্রায় গোটা একটা পরিবার। ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনায় হতদের মধ্যে রয়েছে ৯ শিশু। কার্যত দুর্ঘটনায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে পরিবারটির তিনটি প্রজন্ম। রবিবার রাতে বাসে মক্কা থেকে মদিনা যাওয়ার সময় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ঘুমন্ত অবস্থাতেই বাসের মধ্যে ঝলসে যান ৪২ জন।  এঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয়। আর ১৮ জন একই পরিবারের সদস্য। একটি ডিজেল ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষে বাসটিতে পলকে আগুন ধরে যায়। পালানোর উপায় তো ছিলই না, মুহূর্তে ছাই হয়ে যায় বাসটি।  

Continues below advertisement

অভিশপ্ত ওই বাসে থাকা যাত্রীদের মধ্যে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী শেখ নাজিরউদ্দিন।  তিনি তাঁর স্ত্রী, ছেলে, তিন মেয়ে এবং নাতি-নাতনিদের সঙ্গে তীর্থে গিয়েছিলেন তাঁরা। জানিয়েছেন ভাগ্নে মোহাম্মদ আসলাম। তাঁর কাছে দুর্ঘটনার বিষয়টি তখনও পরিষ্কার ছিল না। শুধু জানতে পেরেছেন পরিবারের এতগুলো মানুষ আর নেই !  জানা গিয়েছে, হত নাজিরউদ্দিনের আরেক ছেলে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। আসলামের অনুরোধ, এই দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত করা হোক। সেই সঙ্গে যে ট্র্যাভেল এজেন্সি তাঁদের যাত্রার আয়োজন করেছিল, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।  রামনগরে নাজিরউদ্দিনের বাড়িতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। পরিবারের এতগুলো মানুষ চলে গিয়েছেন একসঙ্গে। মনে হচ্ছে যেন ... তাঁদের জন্য কাঁদার মতো মানুষও আর বেঁচে নেই! পরিবারের এক আত্মীয় মোহাম্মদ আসিফ বলেন,   আট দিন তীর্থে যান তাঁরা। ওমরাহ শেষ হয়ে গিয়েছিল। মদিনায় ফিরছিলেন তাঁরা । রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে এবং বাসটি আগুনে পুড়ে যায়। শনিবার তাদের ফিরে আসার কথা ছিল। জানা গিয়েছে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন ওই পরিবারের ৯ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং  ৯ জন শিশু। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে মৃতদের মধ্যে আছেন, নাজিরউদ্দিন (৭০), তার স্ত্রী আক্তার বেগম (৬২), ছেলে সালাউদ্দিন (৪২), মেয়ে আমিনা (৪৪), রিজওয়ানা (৩৮) এবং শাবানা (৪০) এবং তাঁদের সন্তানরা। 

শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, ওই  দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ৪৫ জন ভারতীয় তীর্থযাত্রী নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশিরভাগই হায়দরাবাদের বাসিন্দা। তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সৌদি কর্তৃপক্ষ বা ভারত সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে হতাহতের সংখ্যা নিশ্চিত করেনি। তবে জেড্ডার ভারতীয় দীতাবাস একটি হেল্পলাইন খুলেছে। 

Continues below advertisement