নয়াদিল্লি: দেশের নিরাপত্তাবাহিনীর জন্য় এবার বিদেশ থেকে আমদানি করা সুরক্ষা জ্য়াকেটের তুলনায় অনেক সস্তা, ওজনে আরও হালকা জ্যাকেট তৈরি হচ্ছে ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে (বার্ক)। এই বুলেটপ্রুফ জ্য়াকেটের নামকরণ করা হয়েছে দেশের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী ডঃ হোমি জাহাঙ্গির ভাবার নামে-‘ভাবা কবচ’। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অনুরোধ মেনে নিরাপত্তা জওয়ানদের জন্য এই রক্ষাকবচ তৈরি হয়েছে বার্কের ট্রম্বে সেন্টারে। এই বুলেটপ্রুফ জ্য়াকেট এতটাই মজবুত যে, এসএলআর, ইনসাস রাইফেল ও একে-৪৭ থেকে ছুটে আসা গুলিও রুখে দেবে।
ভাবা কবচ-এর দাম যেখানে একেকটি ৭০হাজার টাকা,সেখানে আমদানি করা জ্য়াকেটের পিছনে খরচ প্রতি পিস দেড় লক্ষ টাকা। ওজনও সেগুলির প্রায় অর্ধেক হালকা বলে সুরক্ষাকর্মীদের ব্যবহার করতেও সুবিধা হয়। বার্ক-এর বৈজ্ঞানিকরা জানিয়েছেন, ভাবা সুরক্ষা কবচের ওজন ৬-৭ কেজির মধ্যে, সেখানে বিদেশ থেকে অর্ডার করে আনা জ্যাকেটের ওজন ১৭ থেকে ২০ কেজি। বার্কের ৫ বিজ্ঞানীর একটি টিম এক বছর ধরে ভাবা জ্যাকেট নিয়ে কাজ করেছেন। ২০১৫-১৬য় শুরু হওয়া এই প্রজেক্টের আওতায় স্বদেশী জ্যাকেটের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখছে সিআরপিএফ, ইন্দো-তিব্বত বর্ডার পুলিশ, সিআইএসএফের টিম। জম্মু ও কাশ্মীরে মোতায়েন সেনাবাহিনীর উত্তর কম্যান্ডও এই জ্যাকেটের বিশেষ সংস্করণ পরীক্ষা করছে। এপর্যন্ত ৩০-এর বেশি পরীক্ষায় উতরে গিয়েছে ভাবা কবচ।
নিরাপত্তাবাহিনীর চাহিদা, প্রয়োজনমতো তিন আলাদা আলাদা ধরনের সুরক্ষা কবচ বানানো হয়েছে। হার্ড বোরোন কার্বাইড সিরামিক্স পলিমারের সঙ্গে কার্বন ন্যানো টিউব ও কম্পোজিট পলিমার মিশিয়ে তৈরি হয়েছে তা। বার্ক তাদের পরমাণু চুল্লিতে বোরোন কার্বাইড ব্যবহার করে। জানা গিয়েছে, বার্ক ভাবা কবচ-এর টেকনিক বা প্রযুক্তি কৌশলের দায়িত্ব দিয়েছে হায়দরাবাদের মিশ্র ধাতু নিগমক। সেখানে ব্যাপক সংখ্যায় এই জ্যাকেটের উত্পাদন হতে পারে। আগামী দশ বছর ধরে নিরাপত্তাবাহিনীর প্রতি বছর এক লক্ষ বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট লাগতে পারে।