কলকাতা: করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম মূল কারণ অলস জীবনযাপন। একইসঙ্গে ভাইরাল রোগে মৃত্যুর কারণও বেড়ে যায় এর ফলে। একাধিক গবেষণাপত্রে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সহ বিশ্বের একাধিক গবেষক বলছেন, আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর দেখা গিয়েছে মহামারীর আগের দু'বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে নিষ্ক্রিয় হওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল।
যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন তাঁদের তুলনায় নিষ্ক্রিয় রোগীদের মৃত্যুর হার অনেক বেশি। শুধু তাই নয়, যাঁরা নিয়মিত শরীরচর্চা করেন না এমন করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে বিশেষ সুরক্ষায় রাখতে হচ্ছে বলেও গবেষকরা উল্লেখ করেছেন। ব্রিটিশ জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনে এই গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে।
ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, বিশেষত বয়স বেশি হলে নিষ্ক্রিয়তা বেড়ে যায়। আর তাতে সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকছে। এক গবেষকের কথায়, শারীরিকভাবে অসুস্থতার তুলনায় কোনও ব্যক্তি যদি দীর্ঘদিন শরীরচর্চা না করেন তাহলে তাঁর সংক্রমিত হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই বেশি। আর এই নিষ্ক্রিয়তাকে শক্তিশালী রিস্ক ফ্যাক্টর বলে ব্যাখ্যা করছেন গবেষকরা। গবেষকরা বলছেন অনেকেই স্থুলতা, হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্র বা ক্যান্সারের মতো রোগে ভুগছেন। তাঁদের সংক্রমিত এবং মৃত্যুর আশঙ্কা আছে। কিন্তু তার থেকেও বেশি সংক্রমিত বা মৃত্যুর আশঙ্কা থাকছে যাঁরা অলসভাবে, শরীরচর্চা না করে জীবন কাটাচ্ছেন তাঁদের।
গবেষণা পত্র উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছর জানুয়ারি মাস থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত এই ধরনের রোগীর সংখ্যা ৪৮ হাজার ৪৪০। যার মধ্যে প্রত্যেকের গড় বয়স ৪৭। ৬২ শতাংশ মহিলা আছেন। প্রত্যেকের গড় বিএমআই ৩১। মোট রোগী সংখ্যার মধ্যে অর্ধেকের স্থুলতা, হাইপারটেনশন, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদযন্ত্র বা ক্যান্সারের মতো রোগ নেই। ১৮ শতাংশের কোনও একটা রোগ আছে। গবেষকরা বয়স, শারীরিক অবস্থার নিরিখে এই গবেষণা করেছেন। যাঁরা সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট শরীরচর্চা করেন তাঁদের তুলনায় যাঁরা শরীরচর্চা করেন না তাঁরা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হয়েছেন এমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গবেষকদের। এক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে বিশেষ সুরক্ষায় রাখা হয়েছে।