ঢাকা : বাংলাদেশের সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর। তাঁকে ঔপনিবেশিক-আমলের অফিসিয়াল সিক্রেসি আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যার জেরে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। এমনকী রাষ্ট্রসংঘেরর তরফেও প্রতিবাদ জানানো হয়। তাঁর মুক্তির দাবিতে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সাংবাদিকরা পথে নামেন। 


বাংলাদেশে বহুল প্রচারিত সংবাদপত্র "প্রথম আলো"-র সাংবাদিক রোজিনা। অনুমতি ছাড়াই নিজের মোবাইল থেকে একটি নথির ছবিতে তিনি ক্লিক করেছিলেন বলে অভিযোগ। তার জেরে গত সোমবার তাঁকে সেদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অফিসাররা পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে রাখেন। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে।


দ্য ডেইলি স্টার-এর খবর অনুযায়ী, পাসপোর্ট জমা ও ৫ হাজার টাকার বন্ডে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন মেট্রোপলিট্যান ম্যাজিস্ট্রেট মহম্মদ বাকি বিল্লাহ। এছাড়া দুই জামিনদারের কথা বলা হয়। তাঁদের মধ্যে একজন আইনজীবী ও অপরজন আইনি অভিভাবক হবেন।


জামিন দেওয়ার সময় ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, "সমাজ ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি সুরক্ষিত করা সাংবাদিকদের কর্তব্য। আমি আশা করি যে, এর পর থেকে আমরা দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করব।" 


রোজিনাকে কাশিমপুরের কেন্দ্রীয় মহিলা জেলে রাখা হয়েছিল। স্বাস্থ্যমন্ত্রক তাঁর বিরুদ্ধে ১৯২৩ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা রুজু করে। যাতে সম্ভাব্য মৃত্যুদণ্ড সহ কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে।


এদিকে রোজিনার গ্রেফতারির পর বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এনিয়ে মঙ্গলবার রাষ্ট্রসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্তোনিও গুতারেসের মুখপাত্র স্টিফানে ডুজারিক নিউ ইয়র্কে সংস্থার সদর দফতরে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, এটা স্পষ্টতই উদ্বেগের বিষয়। যে কোনও রকম হয়রানি ও শারীরিক নিগ্রহ ছাড়াই বিশ্বের সর্বত্র সাংবাদিকদের কাজ করতে দেওয়া উচিত। বাংলাদেশ ও অন্যান্য দেশেও তাই হওয়া উচিত। আমরা দেখেছি, এই অতিমারির সময়ে গোটা বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকরা কী গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তাঁদের সেই কাজ করতে দেওয়া উচিত। 


উল্লেখ্য, রোজিনা তদন্তমূলক সাংবাদিকতার জন্য পরিচিত। এই অতিমারির সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তিনি একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রতিবেদনে চিকিৎসক নিয়োগে দুর্নীতি, করোনা চিকিৎসায় জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী কীভাবে ঢাকা বিমানবন্দরে মাসাধিক সময় পড়ে রয়েছে-সেইসব বিষয়ও উঠে আসে।