নয়াদিল্লি: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী শাহিনবাগ প্রতিবাদ প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে চলছে। এযাবত তার চরিত্র অরাজনৈতিক রয়েছে। কিন্তু পাছে সেই প্রতিবাদ অবস্থানের মঞ্চ রাজনৈতিক দলগুলি কব্জা করে ফেলে, সেই আশঙ্কায় রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিলেন এই কর্মসূচির অন্যতম উদ্যোক্তা শারজিল ইমাম। কিন্তু তা সত্ত্বেও দিল্লি ও নয়ডার সংযোগ রক্ষাকারী ১৩ এ রোড আটকে চলতে থাকা প্রতিবাদ অবস্থান থেকে সরে আসতে নারাজ প্রতিবাদীদের অনেকে। প্রতিবাদ কর্মসূচির ফলে এখনও পর্যন্ত আন্দোলনে যে গতি এসেছে, তা হাতছাড়া করতে নারাজ তাঁরা।
সিএএ, এনআরসি বিরোধী প্রতিবাদে সমর্থন জানানো বৃহত্তর জনতাকে বার্তা দিতে এক ফেসবুক পোস্টে শারজিল বলেন, সম্ভবত পুলিশকে মাথা গলাতে বারণ করা হয়েছে, কেননা ‘বিজেপি নিজেরাই হস্তক্ষেপ করতে চায়’। তেমন হলে আমাদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মর্যাদা নষ্ট হবে, মানুষের মনোবল ভেঙে যাবে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে পিছু হটলেও আবার কয়েকদিন বাদে রাস্তা অবরোধ করতে পারি।


শাহিনবাগে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল গত ১৫ ডিসেম্বর, মাত্র ৫০ জন বাসিন্দাকে নিয়ে। তাঁরা রাস্তায় বসে পড়ে যানবাহন চলাচল স্তব্ধ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাশের উত্তরপ্রদেশ থেকে যাতে বিক্ষোভকারীরা তাতে সামিল না হতে পারে, সেজন্য পরদিনই রাস্তা বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তবে অবস্থান, বিক্ষোভকারীদের মধ্যে প্রচুর মহিলা, শিশু থাকায় পুলিশ জলকামান, লাঠি বা কাঁদানে গ্যাস চালিয়ে তাদের হটিয়ে দিতে পারেনি। বিক্ষোভকারীদের তরফেও কোনএ প্ররোচনা ছিল না।
শারজিল ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, গত ২০ দিন আমরা অনেকটা এগিয়েছি। সবচেয়ে বড় প্রাপ্তিগুলির অন্যতম হল মহিলাদের অংশগ্রহণ এবং যে শান্তিপূর্ণ ঢঙে আমরা প্রতিবাদ চালিয়েছি, সেটা। আমজনতাকে প্রতিবাদীদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ বন্ধ রাখার আবেদনও করা হয়েছে পোস্টে।

তাঁর সঙ্গে সামিল হওয়া কয়েকশো স্বেচ্ছাসেবক, রাস্তায় শুয়ে রাত কাটানো মহিলারা ইতিমধ্যে প্রতিবাদস্থল ছেড়েছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। যদিও তিনি পরিষ্কার এও জানিয়েছেন, তাঁরা ঘরে ফিরে যাচ্ছেন না, আন্দোলনের চেহারা কিছুটা বদলাচ্ছেন। তিনি বলেছেন, আমরা প্রতিবাদের দ্বিতীয় ধাপে নামার প্ল্যান করছি। হংকঙের বিক্ষোভকারীদের কৌশলে এগতে, অন্য শহরগুলিতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে দিতে চাইছি।