সকালে অনাস্থা বৈঠকে ১৯-০ ব্যবধানে জয় পায় তৃণমূল।কিন্তু, দুপুর গড়িয়ে বিকেল হতেই স্বস্তি গেরুয়া শিবিরে।তৃণমূলের অনাস্থা বৈঠক, ভোটাভুটি খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিন্দম সিনহা রায়ে জানিয়েছেন, ৩০ ডিসেম্বর যে ৩ তৃণমূল কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন এবং যার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার যে বৈঠক ও ভোটাভুটি হয়েছে, তা খারিজ করা হল। পুর আইন মেনেই পরবর্তী কাজ করতে হবে।
ভাটপাড়া পুরসভা নিয়ে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে যাচ্ছে তৃণমূল।
লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে বিজেপির জয়ের পরেই মুকুল রায় ও অর্জুন সিংহের খাসতালুক বলে পরিচিত কাঁচরাপাড়া,নৈহাটি,হালিশহর,গারুলিয়া ও বনগাঁ পুরসভা তৃণমূলের থেকে ছিনিয়ে নেয় গেরুয়া শিবির।
কয়েক মাসের ব্যবধানে একে সবগুলিই পুনর্দখল করে তৃণমূল। শুধু বাকি ছিল ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের গড় বলে পরিচিত ভাটপাড়া পুরসভা। যার চেয়ারম্যান ছিলেন, অর্জুনের ভাইপো সৌরভ সিং!
গত ৬ই ডিসেম্বর অর্জুনের ভাইপোর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে তৃণমূল।
পুর আইন অনুযায়ী, অনাস্থা আনার ১৫ দিনের মধ্যে বৈঠক ডাকতে হয় পুর প্রধানকে।
পুরপ্রধান বৈঠক না ডাকলে ৭ দিনের মধ্যে তা ডাকতে পারেন উপ-পুরপ্রধান।তা-ও না হলে, ৩ কাউন্সিলর বৈঠক ডাকতে পারেন।
সেই ক্ষমতা বলে বৃহস্পতিবার অনাস্থা বৈঠক ডাকেন ভাটপাড়া পুরসভার তিন তৃণমূল কাউন্সিলর। এদিন সকাল থেকেই পুরসভা চত্বরে ছিল কড়া নিরাপত্তা।
সকাল দশটার পর থেকেই একে একে পুরসভায় আসতে শুরু করেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। কিন্তু এদিন পুরসভায় আসেননি কোনও বিজেপি কাউন্সিলর।
শেষমেষ অনাস্থা বৈঠকে ১৯-০ ভোটে জয়ী হয় তৃণমূল।
ভোটে হারার পর অনাস্থা বৈঠককে বেআইনি দাবি করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। আর এরপরই আদালত তৃণমূলের অনাস্থা বৈঠক ও ভোটাভুটি খারিজ করে দেয়।
ভাটপাড়া পুরসভায় মোট আসন ৩৫টি। একজন কাউন্সিলর মারা গিয়েছেন।প্রাক্তন চেয়ারম্যান অর্জুন সিংহ এখন সাংসদ হওয়ায় তাঁর আসনটি ফাঁকা।
অর্থাৎ এই মুহূর্তে ভাটপাড়া পুরসভার কাউন্সিলরের সংখ্যা ৩৩।তার মধ্যে ১৯ কাউন্সিলরের সমর্থন নিয়ে এদিন অনাস্থা বৈঠকে জয়ী হয় তৃণমূল। কিন্তু, হাইকোর্টে ধাক্কা খেল তারা। এরপর ভাটপাড়া পুরসভার ভবিষ্যৎ কী হয়, সেদিকেই সবার নজর।