নয়াদিল্লি: দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নিয়ে টানাপোড়েনের খবর আসছে লাগাতার। বিশেষ করে পহেলগাঁও হামলার পর থেকে তাঁর একাধিক মন্তব্যে অসন্তোষ ছড়িয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। সেই আবহেই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন তিরুঅনন্তপুরমের কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। জানিয়ে দিলেন, দল নয়, তাঁর কাছে দেশ প্রথম। (Congress News)
কোচিতে আয়োজিত ‘Peace, Harmony and National Development’ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছিলেন তারুর। সেখানে তিনি কার প্রতি অনুগত, জানতে চাওয়া হয়। সম্প্রতি দলের অন্দরে তাঁকে নিয়ে যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে, তার প্রেক্ষিতেই উড়ে আসে ওই প্রশ্ন। কোনও দ্বিধা না রেখেই ওই প্রশঅনের সোজাসাপটা জবাব দেন তারুর। (Shashi Tharoor)
তারুরকে বলতে শোনা যায়, “কার প্রতি অনুগত? আমার মনে হয়, দেশ সবার আগে। দেশকে উন্নততর করে তোলার জন্যই রাজনৈতিক দলগুলির অস্তিত্ব টিকে রয়েছে। তাই আমার মনে হয়, যে দলেরই সদস্য হোন না কেন, ভারতকে উন্নততর করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য় হওয়া উচিত। সেই নিয়ে ভিন্নমত পোষণের অধিকারও রয়েছে সব রাজনৈতিক দলের।”
পহেলাগঁও হামলার পর যেভাবে কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদির সমর্থনে মুখ খোলেন তারুর। Operation Sindoor নিয়ে বিদেশে সরকারের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি, নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এক মঞ্চেও দেখা যায় তাঁকে। সেই নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই তারুরকে ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। সেই প্রসঙ্গে তারুর বলেন, “দেশের অন্দরে এবং সীমান্তে যা ঘটেছে, তা নিয়ে আমি সেনাবাহিনী ও সরকারকে সমর্থন জানানোয় অনেকেই আমার সমালোচনা করেছেন। কিন্তু আমি নিজের অবস্থানেই অনড়। কারণ আমার মনে হয়, দেশের জন্য এটাই সঠিক। ”
কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর বর্তমান সমীকরণ নিয়েও প্রশ্ন করে এক পড়ুয়া। জবাবে তারুর বলেন, “দলকে সম্মানের কথা বলছি মানে কিছু মূল্যবোধ এবং আস্থা রয়েছে, যা দলের সঙ্গে জুড়ে রাখে আমাদের। কিন্তু দেশের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে অন্য দলগুলির সঙ্গে সহযোগিতা করাও প্রয়োজন। কখনও কখনও দলের মনে হয় বিশ্বাসঘাতকতা হচ্ছে। সেটা একটা বড় সমস্যা। গণতন্ত্রে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবেই। কিন্তু জরুরি পরিস্থিতিতে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে তা যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। আমার ১৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনের মন্ত্রই সার্বিক উন্নয়ন। আমি সকলের অন্তর্ভুক্তি, সার্বিক উন্নয়নে বিশ্বাসী। দেশের নিরাপত্তা, জাতীয় স্বার্থরক্ষার্থেও বিশ্বাস করি।”
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও একই কথা বসেন তারুর। জানিয়েছেন, দেশ বরাবরই তাঁর কাছে প্রথম। বলেন, “দেশের সেবা করতেই ভারতে ফিরে এসেছিলাম। আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি।” এ প্রসঙ্গে জওহরলাল নেহরুর উক্তিও শোনা যায় তারুরের মুখে। তাঁর কথায়, “ভারতের মৃত্যু হলে কে বাঁচবে?” কঠিন সময়ে ভেদাভেদ ভুলে একজোট হওয়ার উপর জোর দেন তারুর।