নয়াদিল্লি: শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানিয়েছে বাংলাদেশ। মহম্মদ ইউনূস সরকারের সেই আবেদনে কি সাড়া দেবে ভারত? সেই নিয়ে এবার মুখ খুলল দিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, বাংলাদেশের কাছ থেকে হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ এসেছে দিল্লিতে। বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। বাংলাদেশে শান্তি, স্থিতাবস্থা ও গণতন্ত্র বজায় থাকে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। (Sheikh Hasina Extradition Request)

Continues below advertisement

বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখেমুখি হলে হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে প্রশ্ন করা হয় রণধীরকে। জবাবে তিনি বলেন, "বাংলাদেশের কাছ থেকে অনুরোধ পেয়েছি আমরা। আইনি বিচারপ্রক্রিয়া ও অভ্যন্তরীণ বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে বিষয়টি। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা। সেখানে শান্তি, গণতন্ত্র, সকলের অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় থাকুক।  এ ব্যাপারে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে ভারত।" (Bangladesh News)

গত বছর ডিসেম্বরই হাসিনাকে প্রত্যর্পণের আবেদন জানায় বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনানোর পরও নতুন করে আবেদন জানায় তারা। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন যেভাবে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে পরিণত হয়, তার জন্য হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বাংলাদেশে হাসিনার প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে তারা। তদানীন্তন পুলিশের IG আবদুল্লা আল-মামুনের পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। হাসিনার বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হন মামুন।

Continues below advertisement

যদিও বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ওই রায় মানতে নারাজ হাসিনা ও আওয়ামি লিগ। 'গড়াপেটা' করেই ওই রায় দিয়েছে বলে মত তাদের। পাশাপাশি, ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের গণতান্ত্রিক ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর হাসিনা বলেন, "মৃত্যুদণ্ডের এই রায়ই চরমপন্থীদের খুনি মানসিকতার প্রমাণ। বোঝা যায়, নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও বৈধ রাজনৈতিক দল আওয়ামি লিগকে সরিয়ে দেওয়াই লক্ষ্য ছিল তাদের।" বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে বলেও দাবি করেন হাসিনা। 

হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করার বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে বলে ভারত যদিও জানিয়েছে, তবে বাংলাদেশের দাবি, দিল্লির কাছ থেকে কোনও উত্তর পায়নি তারা। বুধবার দেশের বিদেশ বিভাগের উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেন, "ঢাকার অনুরোধে দিল্লি এক সপ্তাহের মধ্যেই সাড়া দেবে বলে প্রত্যাশা নেই আমার। তবে উত্তর পাব বলেই আশা রাখি।" বাংলাদেশের আইন বিভাগের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, হাসিনাকে ফেরত পেতে হেগ-এ আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছে ইউনূস সরকার।