নয়াদিল্লি: শেখ হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করল ভারত।  একদিন আগে বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করে। তার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটল না, খবর এল, হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করেছে দিল্লি। গত ৫ অগাস্ট থেকে ভারতে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা আওয়ামি লিগ নেত্রী হাসিনা। তাঁকে প্রত্যর্পণের আর্জিও জানিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সেই আবহে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করে কি ঢাকাকে বার্তা দিল দিল্লি? উঠছে প্রশ্ন। (Sheikh Hasina Visa Extension)


মঙ্গলবারই বাংলাদেশ সরকার হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করে। তার পরই, বুধবার হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে খবর হল। তাহলে কি পাকাপাকি ভাবে ভারতের আশ্রয়েই থাকবেন হাসিনা? এই প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি। দিল্লির একটি সূত্র জানিয়েছে, কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রদানের নির্দিষ্ট কোনও বিধি নেই। আপাতত হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় পেলেন বলে ভাবার কোনও কারণ নেই। (India-Bangladesh Relations)


দিল্লি সূত্রে জানা দিয়েছে, রাজধানীতে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন হাসিনা। কোনও রকম অসুবিধা যাতে না হয়, পদ্ধতিগত ভাবে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তার জন্যই ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা হল। দীর্ঘদিনের 'বন্ধু' বাংলাদেশের সঙ্গে এই মুহূর্তে ভারতের সম্পর্ক টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। যে ভারতের হাত ধরে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ, এই মুহূর্তে সেখানে ভারতবিরোধী স্লোগান উঠছে। সংঘাত চলছে সীমান্ত নিয়েও। হাসিনার প্রত্যর্পণের দাবিও জানাচ্ছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে। কিন্তু বাংলাদেশে হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল হওয়ার ঠিক পর পরই যেভাবে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হল, তাতে ইউনূস সরকারকে বার্তা দেওয়া হল বলেও মনে করছেন কূটনৈতিক মহলের একাংশ।


হাসিনার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে বলে মঙ্গলবারই জানায় বাংলাদেশে মহম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দিন ইউনূসের ডেপুটি প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, হাসিনা-সহ মোট ৯৭ জনের পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। আওয়ামি দলসের অনেকেরই পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে বলে জানা যায়। লাই-অগাস্ট মাসে সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন এবং গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে চালানো হত্যাকাণ্ড এবং লোকজনকে 'গুম' করে দেওয়ায় যুক্ত থাকার জন্যই হাসিনা এবং বাকিদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ বলে জানান আজাদ।


সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন গণ অভ্যুত্থানের আকার নিলে, গত বছর ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন হাসিনা। সেই থেকে তিনি ভারতেই রয়েছেন। হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরাতে ইতিমধ্যেই দিল্লির কাছে আবেদন জানিয়েছে ঢাকা। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সেখানকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছে।