কলকাতা: শোভন চট্টোপাধ্যায়ের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও জোরাল হল। তাঁর ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিল রাজ্য সরকার। যা দেখে রাজনীতির কারবারিদের ধারণা, শোভন যে তাদের নেকনজরে ফিরেছেন, এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সেটাই যেন বুঝিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেস হাইকম্যান্ড।

কিছুদিন আগেই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে সংবাদমাধ্যমে বৈশাখী জানান, সৌজন্য সাক্ষাতের জন্যই তিনি গিয়েছিলেন পার্থর বাড়িতে। গিয়েছিলেন দশমীর প্রণাম সারতে। যে ঘটনা থেকে ইঙ্গিত ছিল, শোভন-বৈশাখীর সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব কমছে।

যে ইঙ্গিত আরও প্রকট হয় ভাইফোঁটার দিন। সেদিন কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বৈশাখীকে নিয়েই গিয়েছিলেন শোভন। শুক্রবার বৈশাখী দাবি করেন, ভাইফোঁটার দিন শোভনের কাছে মমতা জানতে চান, কেন তিনি লেকে হাঁটতে যাচ্ছেন না। জবাবে বৈশাখী বলেন, নিরাপত্তার কারণেই হাঁটতে যেতে পারছেন না শোভন। বৈশাখীর দাবি, এরপরই রাতে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করেন কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক। সেই মতো গতকাল থেকে শোভনের গোলপার্কের ফ্ল্যাটের সামনে পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়। সূত্রের খবর, মন্ত্রী থাকাকালীন যে ওয়াই প্লাস ক্যাটেগরির নিরাপত্তা পেতেন শোভন, সেই নিরাপত্তাই ফেরানো হয়েছে। তার আগে গত ১৬ অগাস্ট, শোভনের নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে রাজ্য সরকার।

লোকসভা ভোট পরবর্তী অধ্যায়ে বৈশাখীকে নিয়েই বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন শোভন। তবে শুরুর দিন থেকেই বিজেপি নেতৃত্বের একাংশের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় তাঁদের। দেবশ্রী রায়ের বিজেপিতে যোগদানের চেষ্টা বিফল হয় মূলত তাঁদের আপত্তিতেই। তারপর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন বিজেপি নেতার থেকে ক্রমশ দূরত্ব বেড়ে চলেছে শোভন-বৈশাখীর। শুক্রবারের পর তাঁদের তৃণমূলে ফেরার জল্পনা আরও জোরাল হয়ে পড়ল।

রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে অবশ্য কটাক্ষ করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘শোভনের সুরক্ষা কেন তুলে নেওয়া হল, কেনই বা ফেরানো হল, যারা দিয়েছেন, তারাই এ নিয়ে বলতে পারবেন।’