কলকাতা: অবশেষে এসএসকেএম হাসপাতাল থেকে ছাড়া হল শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। নিয়ে যাওয়া হল প্রেসিডেন্সি জেলে। সেখান থেকে তাঁকে গোলপার্কে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে। জানা গিয়েছে রিস্ক বন্ডে সই করেই ছাড়া পেয়েছেন শোভন। শনিবার তাঁর ছুটি ঘিরে দিনভর উত্তেজনা অব্যাহত। 'অন্যায়ভাবে আটকে রাখার' অভিযোগে দফায় দফায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছেন শোভন এবং তাঁর বান্ধবী বৈশাখী। তবে অবশেষে ইতি। আজই সম্ভবত বৈশাখীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। জেল সূত্রে খবর, প্রেসিডেন্সি জেলে কিছু ফর্মালিটি সেরে গোলপার্কের বাড়িতে রওনা দেবেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। 


নারদ মামলায় প্রথমে জামিনে স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর প্রেসিডেন্সি জেলে যান শোভন চট্টোপাধ্যায়। পরদিন ভোরে অসুস্থতা বোধ করায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ডে। কিন্তু সেখানে সিবিআই হেফাজতের থেকেও খারাপ অবস্থায় শোভন চট্টোপাধ্যায়কে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আরও অভিযোগ, 'বারবার অনুরোধ, বন্ড দিয়ে ছাড়ানোর কথা বললেও তা মানছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাগে শোভন চট্টোপাধ্যায় খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন বৈশাখী। 


শনিবার সকালে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'আমার মনে হয় শোভনবাবু যদি এখন বলেন উনি পর্ণশ্রীর বাড়িতে ফিরতে চান, তবে এসএসকেএম-ও জেল কর্তৃপক্ষ রাজি হয়ে যাবে। এই চাপ যে প্রভাবশালী পক্ষ থেকেই আসুক না কেন শোভনবাবু কোথাও মাথা নোয়াননি আর নোয়াবেনও না। উনি এত হ্যারাসমেন্ট সহ্য করতে পেরেছেন, আরও পারবেন। তিনি আরও বলেন,'কেউ মন্ত্রী বলে সে বাড়ি যেতে পারবে ও সাধারণ নাগরিক বলে বাড়ি যাওয়ার অধিকার নেই এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।' 


এরপর বিকেলে হাসপাতালের বারান্দা থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে অন্যায়ভাবে আটকে রাখার অভিযোগ তোলেন শোভন। বলেন, 'আমি সুস্থ। রিস্ক বন্ডে সই করে হলেও বাড়ি ফিরতে চাই' পাশাপাশি বৈশাখীকে আক্রমণ প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষকে এক হাত নেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। 


এদিন সন্ধেতে পাল্টা আক্রমণ করে কুণালের দাবি, হাসপাতালে থাকলেও বন্দিই আছেন শোভন। এই অবস্থায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা মানে আদালতের নির্দেশ অমান্য করা। 
শনিবার এসএসকেএম হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের বারান্দায় এসে বেশ কিছু ক্ষণ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন শোভন। এ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল। বলেছেন 'হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এই সময় সংবামাধ্যমের সঙ্গে কথা বলা যাবে না বলে জানিয়েছে। কিন্তু সেই নির্দেশ লঙ্ঘন করা হয়েছে।'


সবমিলিয়ে দিনভর চলতে থাকে বাকযুদ্ধ। অবশেষে রিস্কবন্ডে সই করে বৈশাখীর সঙ্গে গোলপার্কের বাড়িতে ফিরছেন প্রাক্তন মেয়র। উল্লেখ্য, নারদ মামলায় গ্রেফতার হওয়া চার নেতা-মন্ত্রীকে শুক্রবার গৃহবন্দি করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তাঁরা নিজেদের বাড়িতেই কড়া নজরদারির মধ্যে থাকবেন শোভন চট্টোপাধ্যায়সহ বাকিরা। পরবর্তী রায় না আসা পর্যন্ত গৃহবন্দিই থাকতে হবে তাঁদের।