নয়াদিল্লি: অবিলম্বে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরি, বন্টন, পরীক্ষা বন্ধ করা উচিৎ। এমনটাই দাবি জানিয়েছেন চেন্নাইয়ের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি কোভিশিল্ডের স্বেচ্ছাসেবক। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যে টিকা অ্যাস্ট্রাজেনেকা বানাচ্ছে, তা ভারতে বানানোর অনুমতি পেয়েছে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট। ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ভ্যাকসিন নেওয়ার পর থেকেই তাঁর শারীরিক এবং মানসিক সমস্যা হচ্ছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ কোটি টাকা দাবি করেছেন ৪০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিরাম ইনস্টিটিউট।


গত ১ অক্টোবর চেন্নাইয়ের  শ্রী রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চে ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নেন। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া এবং ইনস্টিটিউটের এথিক্স কমিটি খতিয়ে দেখছে আদৌ স্বেচ্ছাসেবকের অভিযোগ সঠিক কিনা। একটি আইনি সংস্থা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ তথা আইসিএমআর, ডিজিসিআই এবং সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনকে নোটিশ পাঠিয়েছে। অন্যদিকে আস্ট্রাজেনেকার সিইও, অধ্যাপক অ্যান্ড্রু পোলার্ড অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রধান গবেষক এবং শ্রী রামচন্দ্র ইনস্টিটিউট অব হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের উপাচার্যকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।

নোটিসে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা চলছে। নিজের বর্তমান এবং ভবিষ্যতে কীভাবে হবে আলোচনা তা নিয়ে ট্রমার মধ্যে আছেন তিনি। তাই তাঁকে আর্থিক সাহায্য করা উচিৎ। ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন তিনি। গতকালই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল নিয়ে সাফল্য দাবি করেছে। শনিবার আদার পুনাওয়ালা বলেন, কোভিশিল্ড মৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হবে। ভ্যাকসিন নিলে  হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা শূন্যতে নেমে আসবে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমবে ৬০ শতাংশ। তিনি আরও বলেছেন. প্রাথমিকভাবে সারা ভারতে এই ভ্য়াকসিন বন্টন করা হবে। তারপর তা বন্টন করা হবে কোভ্যাক্স দেশগুলিতে। বিশেষত আফ্রিকার দিকে নজর দেওয়া হবে। আর তার ঠিক ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই অভিযোগ সামনে এল।

এদিন বিবৃতি দিয়ে পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট বলেছে, ভ্যাকসিন নিয়ে এই অভিযোগ ভুল ধারণা তৈরি করছে। সিরাম ইনস্টিটিউট স্বেচ্ছাসেবকের শারীরিক অবস্থায় সমব্যাথী। কিন্তু ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের সঙ্গে তাঁর শারীরিক অবস্থার কোনও সম্পর্ক নেই। ওই স্বেচ্ছাসেবক তাঁর শারীরিক অবস্থার ভ্যাকসিন ট্রায়াল নিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। মেডিক্যাল টিম তাঁকে বলেছিল, ভ্যাকসিন ট্রায়ালে অংশ নিলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হবে না। এখন তিনি সিরাম ইনস্টিটিউটের নামে মিথ্যা প্রচার করছেন। কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই ব্যক্তি এই কাজ করছেন। আর এতে ১০০ কোটি টাকার বেশি লোকসান হবে। এই ধরনের মিথ্যে অভিযোগ থেকে সংস্থাকে রক্ষা করা হবে।

অভিযোগের প্রতিক্রিয়া দিয়েছে আইসিএমআর। আইসিএমআরের এপিডেমিওলজি এবং কমিউনিকেবল ডিজিজের প্রধান সমীরণ পান্ডা জানান, তাড়াহুড়ো করে কোনও তদন্ত ঠিক হবে না। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া এবং ইনস্টিটিউটের এথিক্স কমিটি অভিযোগ  খতিয়ে দেখবে। এর আগে ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া ভারতে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফার ট্রায়াল বন্ধ করে দেয়। ১৫ সেপ্টেম্বর পুণের সিরাম ইনস্টিটিউট ট্রায়ালের অনুমতি দেয়।