বেঙ্গালুরু: একেবারে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা ছিল। তবে কর্নাটকে শেষ মেশ শিকে ছিঁড়েছে সিদ্দারামাইয়ারই (Siddaramaiah)। কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শনিবার শপথ নিতে চলেছেন তিনি। দৌড়ে থাকা ডিকে শিবকুমার (DK Shivakumar) হচ্ছেন তাঁর ডেপুটি। একই সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতিও থাকছেন তিনি (Karnataka CM)। হাইকম্যান্ড সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর পাশাপাশি হাসিমুখেও দেখা গিয়েছে তাঁদের। তবে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে কংগ্রেস ৫০:৫০ সমীকরণের পন্থা নিয়েছে বলে এবার খবর সামনে এল (Congress)। 


বৃহস্পতিবারই বেঙ্গালুরু ফেরেন সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার


মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি নিয়ে দিল্লিতে ভোররাতে সমাধানসূত্র বেরনোর পর, বৃহস্পতিবারই বেঙ্গালুরু ফেরেন সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার। সেখানে দলের কর্মী-সমর্থকরা জয়ধ্বনি দিয়ে স্বাগত জানান তাঁদের। হাসিমুখে পাশাপাশিও দেখা গিয়েছে তাঁদের। পরিষদীয় দলের বৈঠকেও শামিল হন দু'জনে। সব সেরে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করে সরকার গড়ার দাবিও জানিয়ে এসেছেন। পরিস্থিতিত স্বাভাবিক দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন কংগ্রেস কর্মী এবং সমর্থকরা। 


কিন্তু কংগ্রেসের অন্দর থেকেই সমঝোতা নিয়ে নয়া তত্ত্ব সামনে আসছে। ক্ষমতার ৫০:৫০ বণ্টনে সম্মত হয়েছেন দুই নেতা। যার আওতায় ঠিক হয়েছে, প্রথম আড়াই বছর ক্ষমতার রাশ থাকবে সিদ্দারামাইয়ার হাতে। পরের আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সিতে বসবেন শিবকুমার। অর্থাৎ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাঁচ বছরের মেয়াদ কাল ভাগাভাগি করে নেবেন দুই নেতা। 


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: শনিতে কর্নাটকে শপথ সিদ্দারামাইয়ার, মমতাকে আমন্ত্রণ কংগ্রেসের, ’২৪-এর ঢাকে কাঠি!


টানা পাঁচ দিন ধরে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রিত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানি চলেছে। সিদ্দারামাইয়া এবং শিবকুমার শেষে দিল্লি পাড়ি দেন। সেখানে শেষ মেশ সনিয়া গাঁধীকেই মধ্যস্থতা করতে হয় বলে কংগ্রেসের একটি সূত্রে দাবি করছে। জানা গিয়েছে, সিদ্দারামাইয়ার ডেপুটি হতে সনিয়াই রাজি করান শিবকুমারকে। প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্বও তাঁর হাতেই রাখা হয়। এর পাশাপাশি শিবকুমারকে যে কোনও ছ'টি বিভাগের দায়িত্ব বেছে নেওয়ার বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়। দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশেই শেষ মেশ 'আত্মত্যাগে' রাজি হন শিবকুমার।


যদিও কর্নাটকই প্রথম নয়, এর আগে রাজস্থানেও কংগ্রেস নেতৃত্ব এমন অবস্থান নিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে রাজস্থানে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে ছিলেন অশোক গহলৌত এবং সচিন পায়লট। সে বারও বিস্তর টানাপোড়েন হয়। দলীয় সূত্রে জানা যায়, তাতে শেষ মেশ আড়াই বছর করে মেয়াদকাল বেঁধে দেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। পরবর্তীতে তা নিয়ে ঝামেলা বাধে। আড়াই বছর পরও কুর্সি ছাড়তে রাজি হননি গহলৌত। তাতে সটান দিল্লি পৌঁছে যান সচিন। তার পরও নিজের অবস্থান থেকে সরেননি গহলৌত। বরং নিজের অনুগামীদের নিয়ে তিনি বিদ্রোহের হুঁশিয়ারি দেন বলে শোনা যায়, যাতে নাকি হাত তুলে নেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। 


কংগ্রেসের অন্দরে এখন থেকেই আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে


তাই কংগ্রেসের অন্দরে এখন থেকেই আশঙ্কা মাথাচাড়া দিতে শুরু করেছে। দলের একাংশের আশঙ্কা, এত বিপুল ভোটে জিতে আসার পর, কর্নাটকেও রাজস্থানের পুনরাবৃত্তি হবে না তো! শুধু তাই নয়, বিপুল জনসমর্থন পাওয়ার পরও, মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করতে যে ভাবে হিমশিম খেতে হল কংগ্রেসকে, তাতে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে সে রাজ্যে ভোটবাক্সেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে আশঙ্কা করছেন অনেকে।