গ্যাংটক : সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (Sikkim Disaster) ৭ জওয়ান-সহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৪০। এই পরিস্থিতিতে একটি সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং (Prem Singh Tamang) দাবি করেছেন, চুংথাং বাঁধে খারাপ নির্মাণকাজের জন্য এই ঘটনা। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে সৃষ্টি হওয়া জলোচ্ছ্বাসে ১২০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ধূলিস্মাৎ হয়ে গেছে। নিম্নমানের কাজের জন্য তাই পূর্বতন সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সরকারকে দায়ী করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।


সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ। ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গেছে। নিম্ন অববাহিকায় বিপর্যয়ও সেই কারণেই। হ্যাঁ, মেঘভাঙা বৃষ্টি হয়েছে লোনাক হ্রদে। কিন্তু, পূর্বতন সরকারের নিম্নমানের কাজের কারণে বাঁধ ভেঙে গেছে এবং আরও বেশি জলোচ্ছ্বাস তীব্র আকারে আঘাত করেছে সিকিমের নীচের অংশে।" এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের সাহায্য চাওয়া হয়েছে।  প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন প্রেম সিং তামাং। তিনি জানান, ত্রাণ ও উদ্ধারকারী দলকে আকাশপথে তুলে আনতে চায় কেন্দ্র। কিন্তু, খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি।


সিকিমের মুখ্যসচিব বিজয় ভূষণ পাঠক বলেন, লাচেন ও লাচুংয়ে প্রায় ৩ হাজার লোক এখনও নিরুপায় অবস্থায় রয়েছেন। বাইকে করে সেখানে গিয়েছিলেন ৩,১৫০ জন মানুষ। বন্যার কারণে তাঁরাও আটকে পড়েছেন। সেনা ও বায়ুসেনার বিমানে তাঁদের উদ্ধার করা হবে।


এদিকে আরও একটি মেঘভাঙা বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় সিকিম প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের যাতায়াতে দেরি করতে বলা হয়েছে। প্রসঙ্গত, মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তৈরি হওয়া জলোচ্ছ্বাসে সিকিমে ১১টি সেতু ভেঙে গেছে। এর পাশাপাশি জলের পাইপলাইন, সেচলাইন এবং চার জেলার ২৭৭টি বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের উদ্ধারের জন্য উত্তর সিকিমে এনডিআরএফ এর দলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। 


এদিকে বন্যার কারণে সামরিক সরঞ্জাম তিস্তায় (Teesta) ভেসে গিয়েছে, তার মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরকও রয়েছে। সেনার তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নদীতে বা নদীর পাশে কোনওরকম অচেনা জিনিস দেখলে, কোনওরকম প্যাকেজ বা আগ্নেয়াস্ত্র দেখলে তা হাত দিতে বারণ করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে জানাতে বলা হয়েছে স্থানীয় থানায়। ভেসে যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের জন্য একাধিক তল্লাশি দল পাঠানো হয়েছে সেনার (Indian Army) তরফে।