কলকাতা: সিপিএম-এর (CPM) সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির অবস্থা সঙ্কটজনক। নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (AIIMS)-এ ভর্তি রয়েছেন তিনি। হাসপাতালের ICU বিভাগে ভর্তি রয়েছেন ইয়েচুরি। শ্বাসনালিতে গুরুতর সংক্রমণ রয়েছে। কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে চলছে শ্বাস-প্রশ্বাস। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল তাঁকে পর্যবেক্ষণ করছেন। (Sitaram Yechury)


ইয়েচুরির অবস্থা সঙ্কটজনক বলে জানিয়েছে CPM-ও। দলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই মর্মে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। ৭২ বছর বয়সি ইয়েচুরি গত ১৯ অগাস্ট AIIMS-এ ভর্তি হন। নিউমোনিয়ার মতো অবস্থা ছিল তাঁর। বুকে সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হন হাসপাতালে। সেই থেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। (Sitaram Yechury Health Condition)



গোড়ায় ইয়েচুরির হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি জানতেই পারেনি কেউ। এমনকি গত ২২ অগাস্ট ছয় মিনিটের একটি ভিডিও প্রকাশ করেন ইয়েচুরি। সেই ভিডিওয় পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধবেদ ভট্টাচার্যের প্রয়াণে শোকবার্তা দেন। ২৩ অগাস্ট আবার জম্মু ও কাশ্মীর বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএম, কংগ্রেস এবং ন্যাশনাল কনফারেন্সের জোট নিয়ে বার্তা পোস্ট করেন। ২৯ অগাস্টও আব্দুল গফুর নুরানির মৃত্যুতে শোকবার্তা দেন ইয়েচুরি। এর পর দলের তরফে ৩১ অগাস্ট বিবৃতি জারি করা হয়, যাতে বলা হয়, শ্বাসকষ্ট সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তিনি। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দল তাঁকে পর্যবেক্ষণ করছেন।


CPM পলিটব্যুরোরও সদস্য ইয়েচুরি। সম্প্রতি ক্যাটাব়্যাক্ট সার্জারিও হয় তাঁর। দলের জোট সংক্রান্ত সমস্ত বিষয় তিনিই সামলান। প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক হরকৃষ্ণ সিংহ সুরজিতের উত্তরাধিকার বয়ে চলেছেন। ১৯৯৬ সালে তদানীন্তন ইউনাইটে় ফ্রন্ট সরকারের জন্য পি চিদম্বরমের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দারিদ্র ঘোচানোর অভিন্ন ন্যূনতম প্রকল্পের (Common Minimum Programme) খসড়া তৈরি করেন ইয়েচুরি। ২০০৪ সালে কেন্দ্রে UPA সরকারের অন্যতম রূপকারও ছিলেন।


১৯৭৫ সালে দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় থেকেই রাজনীতিতে যুক্ত ইয়েচুরি। জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতারও হন। ১৯৭৭-'৭৮ সালে তিন-তিন বার JNU-এর ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ১৯৭৭ সালে JNU-এর আচার্য পদ থেকে ইন্দিরা গাঁধীর পদত্যাগ চেয়ে সরব হন। ইন্দিরার সামনে, তাঁরই বাসভবনে, তাঁর পদত্যাগের দাবিপত্র পড়ে শোনান ইয়েচুরি। সেই ছবি আজও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরেফিরে উঠে আসে। ফিদেল কাস্ত্রোর সঙ্গে সাক্ষাৎ থেকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব নিয়ে টানাপোড়েন, রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন মুহূর্ত এবং করোনায় ছেলের মৃত্যু, সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে বিশদে তুলে ধরেন ইয়েচুরি।